সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩, ১২:৪০ এএম
ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে বেধরক পিটুনি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক। তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনা হিন্দি সিনেমাকে হার মানিয়েছে।’
বুধবার জাতীয় সংসদে এক বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক এ কথা বলেন।
মুজিবুল হক বলেন, ‘হিন্দি সিনেমার মতো কোনো এক কর্মকর্তা তার অবৈধ প্রেমের কারণে ছাত্রলীগের নেতাদের থানায় পুলিশের কন্ট্রোল রুমে নিয়ে সাত–আটজন মিলে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করেন। এটা সিনেমাকে হার মানিয়েছে। এটা অত্যন্ত জঘন্য ঘটনা। পুলিশের হেফাজতে নিয়ে বাংলাদেশের নাগরিককে নির্যাতন করে, তা–ও সরকারি দলের সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের নির্যাতন করে, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবস্থাটা কী?’
জাতীয় পার্টির এই নেতা এ ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শুধু তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিলে সুবিচার হবে না। সুবিচার হবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা মামলা করে ফৌজদারি আইনের আওতায় এনে বিচার করে সাজার ব্যবস্থা করা হলে।
মুজিবুল হক বলেন, ঢাকায় যেসব পুলিশ কর্মকর্তার পদায়ন করা হয়, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া হয়। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করে যারা অনুগত, তাদের ঢাকায় পদায়ন করা হয়। তারপরও এমন কর্মকর্তা ঢাকায় কীভাবে আসেন?
গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী দুই জন হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।
শনিবার রাতে একটি ঘটনার জেরে শাহবাগ থানায় তাদের নির্যাতনের পর মারধর করা হয়। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় গিয়ে মধ্যরাতে ঘটনা মীমাংসা করেন।
ঢাবি ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানায়, এডিসি হারুন শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুন ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। তখন তাদের সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগবিতণ্ডা হয়।
পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। এরপর অবস্থা খারাপ হলে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে, গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এডিসি হারুন ও এডিসি সানজিদা আফরিন দাবি করেছেন, ঘটনার জন্য সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন দায়ী। ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে তিনিই প্রথম হারুনের ওপর হামলা চালান।