আগস্ট ২০, ২০২৪, ১১:২০ এএম
দুর্নীতিবাজদের হাতে থাকা রেকর্ড পরিমাণ কালো টাকা উদ্ধার ও তাদের গ্রেপ্তারে শীঘ্রই যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হচ্ছে। বিতর্ক এড়াতে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা চেয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গত শুক্রবার সাবেক সচিব শাহ কামালের মোহাম্মদপুরের বাসায় বৈদেশিক মুদ্রাসহ বস্তা বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার দিন ৫ আগস্ট ঝালকাঠিতে আমির হোসেন আমুর বাসায়ও কোটি টাকা পাওয়া যায়। পরদিনই বরিশালে কোটি টাকা নিয়ে পালানোর সময় একজন প্রকৌশলী আটক হন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ব্যাংক লুট, কর ফাঁকি, ঘুষ-কমিশন-চাঁদার মাধ্যমে ফুলেফেঁপে উঠেছেন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা, পুলিশ, বিচারক, প্রকৌশলীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিদেশে পাচারের পাশাপাশি কালো টাকার বড় একটি অংশ অনেকেই দেশে রেখেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গত জুন পর্যন্ত মানুষের হাতে ছিল রেকর্ড পরিমাণ নগদ টাকা, ৩ লাখ কোটির বেশি। মে মাসে যার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দুর্নীতিবাজদের একটি অংশ আতঙ্কে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অনৈতিক উপায়ে যারা অর্থ উপার্জন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করতে হবে। অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই সঙ্গে অন্যায়কারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”
এরই মধ্যে শীর্ষ কিছু দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে আরও বড় পরিসরে অভিযানের ঘোষণা আসতে পারে। সেনাবাহিনী ছাড়াও আরও ৪ সংস্থার সমন্বয়ে বেশ কিছু টিম তৈরি হতে পারে বলেও জানা গেছে।
তবে এক-এগারোর যৌথ বাহিনীর অভিযান থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ তখন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “প্রথম কথা হলো যে, অভিযান পরিচালনা করা হবে সেটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় হতে হবে। সাদা পোশাক পরে ডিবি বা গোয়েন্দা সংস্থার নামে যে ধরপাকড়ের একটা রীতি আছে, সেটি উচিত নয় বলে মনে করি আমরা। সঠিকভাবে ঘোষণা দিয়ে একাধিক সংস্থার সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা উচিত।”