গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সেনাবাহিনীর গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে সেনাবাহিনী। এতে দুই শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সেনাসদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী মোল্লা টুকু ও গোপীনাথপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আশরাফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চন্দ্রদিঘলিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়ন ও গ্রামবাসী ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সেনাবাহিনী বাধা দিলে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা সেনাবাহিনীকে ধাওয়া করেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেনা টহল দলের ওপর হামলা করে। বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ - ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনাবাহিনীর ২টি টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা সেনা টহল দলের ওপর ইট- পাটকেল ছুঁড়ে মারে এবং দেশীয় তৈরি অস্ত্র দিয়ে টহল দলের সদস্যদের আঘাত করলে ৩ জন অফিসার, ১ জন জুনিয়র কমিশন অফিসার ও ৫ জন সেনাসদস্য আহত হয়।
পরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনা টহল দল ৪ রাউন্ড অ্যানিমেশন ফায়ার করে। পরিস্থিতির তীব্রতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাকসুদুর রহমান জানান, “বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর বাসস্টান্ডে প্রায় তিন-চার হাজার মানুষ সড়ক অবরোধ করে। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অবরোধকারীদের বোঝাতে গেলে তারা সেনাবাহিনীর ওপরে চড়াও হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় চার সেনা সদস্য আহত হন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী মোল্যা টুকু বলেন, “বিকেলে গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কথা শুনেছি। তবে এ সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না।”
এ বিষয়ে গোপীনাথপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আশরাফ হোসেন জানান, “বিকেলে গোপীনাথপুরে এলাকাবাসীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর ঝামেলার কথা শুনেছি। কিন্তু আমরা ঘটনাস্থলে যাইনি। বিষয়টি সেনাবাহিনী দেখবে।”