‘মঙ্গল’ শোভাযাত্রার নাম বদলের কারণ জানতে চায় চারুকলার শিক্ষার্থীরা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম

‘মঙ্গল’ শোভাযাত্রার নাম বদলের কারণ জানতে চায় চারুকলার শিক্ষার্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

ইউনেস্কোর অপরিমেয় বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া বর্ষবরণের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তনের ‘যথার্থ কারণ’ জানানোর দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

তারা বলছেন, চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের মতামত ছাড়াই কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার সঙ্গে তারা একমত নয়। খবর বিডিনিউজ টয়েন্টিফোর ডটকম।

রোববার, ১৩ এপ্রিল চারুকলা অনুষদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন চারুকলা অনুষদের একদল শিক্ষার্থী। বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে, চারুকলা অনুষদের প্রিন্ট মেকিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাহারা নাজিফা বলেন, “ঐতিহ্যগতভাবে চারুকলার শিক্ষাক-শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রার আয়োজন করে। এরইমধ্যে বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। এবারও বৈশাখ শেকলমুক্ত নয়।

“মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা হবে। আমরা এ সিদ্ধান্ত সমর্থন করছি না। চারুকলার শিক্ষার্থীদের মতামত ছাড়া এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

শোভাযাত্রার প্রস্তুতির মধ্যে চারুকলায় দুটি মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিরও দাবি জানান তিনি।

বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনে চারুকলার আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে মঙ্গল শব্দটি বাদ দিয়ে ‘বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রা’ নাম দেওয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ।

তিনি দাবি করেন, এবার নববর্ষ উদযাপন ‘একপেশে সাংস্কৃতিক চর্চা’ থেকে বেরিয়ে এসে ‘ইনক্লুসিভ সাংস্কৃতিক চর্চা’ হবে।

ওই সিদ্ধান্তের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। নামের এ পরিবর্তনকে মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য ‘অশনি সংকেত’ হিসেবে বর্ণনা করে বিষয়টিকে ‘সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর’ কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘আত্মসমর্পণ’ হিসেবে বর্ণনা করে বাম ধারার ছাত্র সংগঠনগুলো। কর্তৃপক্ষকে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসারও আহ্বান জানায় তারা।

এদিকে শনিবার ভোরে চারুকলায় শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো একটি প্রতিকৃতি। সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে মাস্ক পরা এক যুবককে আগুন দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলনে জাহারা নাজিফা বলেন, “১৯৮৯ সাল থেকে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এখনে এভাবে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছি আমরা। ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিলতা এড়াতে নীতিমালা করার দাবি করছি।”

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে’ ব্যবহার করেছে অভিযোগ করে এই শিক্ষার্থী বলেন, শোভাযাত্রা বাতিল হোক, তা তারা চান না। তারা চান, সবাইকে নিয়ে এ উৎসব হোক।

“কিন্তু ‘মঙ্গল’ বাদ দেওয়ার একটি ভ্যালিড কারণ দেখান আমাদের।”  

Link copied!