বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত পঞ্চম বার্ষিক প্রতিরক্ষা সংলাপ শুরু হয়েছে। সোমবার (২৮ আগস্ট) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকা সেনানিবাসে এ ডায়ালগ চলছে। সোমবার আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।
২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল সই হওয়া প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, তিন বাহিনীর সাধারণ বিষয়গুলো অ্যানুয়েল ডিফেন্স ডায়ালগের (এডিডি) মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলাদেশ ও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতি বছর এ সংলাপ করে আসছে বাংলাদেশ ও ভারত। এ পর্যন্ত উভয় দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চারটি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষ চতুর্থ ডায়ালগ ২০২২ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আইএসপিআর জানায়, এই সংলাপে মূলত উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক সামরিক বিষয়, সামরিক শিল্প, দুর্যোগ মোকাবিলা ও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশের পক্ষে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ভারতের পক্ষে দেশটির প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আরমান, নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর আগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ভারতের প্রতিনিধি দলের প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। উভয় দেশের মধ্যকার ‘ট্রাই সার্ভিসেস স্টাফ টক (টিএসএসটি) মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হবে।
আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বর্তমানে অত্যন্ত নিবিড়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিরক্ষা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা প্রদানের জন্য ভারতের ক্রমাগত সহায়তার বিষয়টি সুস্পষ্ট। প্রতি বছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনেক সদস্য ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। একইভাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী বিভিন্ন পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে একসঙ্গে কাজ করে আসছে। এ ছাড়া উচ্চপর্যায়ের সামরিক সফর বিনিময় দুই দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার একটি অন্যন্য বৈশিষ্ট্য।
আইএসপিআর আরও জানায়, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ভিত্তি সুদৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে— যা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৈরি হয়েছিল। উভয় দেশের এই সম্পর্ক বহুমাত্রিক, বহুমুখী এবং সর্বদা বিকাশমান। এছাড়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকসহ সব ক্ষেত্রে এ দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।