সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩, ০৯:৫৮ এএম
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করতে চাই যে, বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে যাবে।’
এ সময় শেখ হানিনা এ-ও বলেন, মানবাধিকার রক্ষার নামে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর রাজনৈতিক চাপ কাম্য নয়।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১৯বার ভাষণ দিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আগের বছরগুলোর মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় ভাষণ দেন। জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমবার বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, এ বছর সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ৭৫তম বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, এই মাহেন্দ্রক্ষণে অবশ্যই মানবতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে হবে এবং সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতা নিশ্চিতে সামগ্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে। আবার এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে মানবাধিকার রক্ষার নামে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর যেন চাপ সৃষ্টি করা না হয়।
ভাষণে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আজকের এই অধিবেশনে আমি পরিষ্কারভাবে পুনর্ব্যক্ত করতে চাই যে বাংলাদেশ নিজের সংবিধান অনুসারে গণতান্ত্রিক চর্চা, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অব্যাহত রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বিশ্বনেতাদের প্রতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি তাঁর ভাষণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, মানবাধিকার এবং ২০০৯ সালের পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রসঙ্গ আলোচনা করেন।
সুষ্ঠু ভোটের তাগিদ দিল যুক্তরাষ্ট্র
বাসস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া বলেছেন, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচন চান। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় আজরা জেয়া এসব কথা বলেন।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ব্রিফিংয়ে বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া রোহিঙ্গা সংকট, বিভিন্ন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আহ্বান
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে আসিয়ান সদস্যদেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ‘তারা কি আমাদের ভুলে গেছে?’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।