সড়কে ১৪ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি: টিআইবি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৯, ২০২৪, ০৩:১১ পিএম

সড়কে ১৪ বছরে ৫১ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি: টিআইবি

ছবি: সংগৃহীত

২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্থাৎ গত ১৪ বছরে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধীনে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজেই ২৯ হাজার ২৩০ কোটি থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) ধানমন্ডির টিআইবির কার্যালয়ে ‘সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করেন টিআইবির সহযোগী গবেষক মো. মোস্তফা কামাল এবং জৈষ্ঠ গবেষক মো. জুলকারনাইন।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, নির্মাণ কাজে রাজনীতিবিদ, ঠিকাদার এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে ১০-২০ শতাংশ ঘুষ দিতে হয়। বিশেষ করে, ঠিকাদারি কার্যাদেশ প্রাপ্তির জন্য ১১-১৪ শতাংশ ঘুষ প্রদান করতে হয়, যা প্রকল্পের ব্যয়ের একটি বড় অংশ। এছাড়া দরপত্র লাইসেন্স ভাড়া, কার্যাদেশ বিক্রয়, স্থানীয় রাজনৈতিক চাঁদাবাজি ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রায় ২-৬ শতাংশ ঘুষ দিতে হয়।

টিআইবির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদনের ক্ষেত্রে সওজ-এর কিছু কর্মকর্তা পরিকল্পনা কমিশনের কর্মচারীদের ২-১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দেওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে। এতে প্রতীয়মান হয়, উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যাদেশ ও বিল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ঘুষের পরিমাণ ১১-১৪ শতাংশ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ঠিকাদারি কার্যাদেশ পেতে ৫-৫ শতাংশ এবং সরেজমিনে পরিদর্শন ও বিল প্রাপ্তির জন্য ৬-৮ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ দেওয়া হয়।

২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে সওজ-এর উন্নয়ন প্রকল্পের ঘুষ বাণিজ্যের পরিমাণ ১৩ হাজার ৯৮০ কোটি থেকে ১৭ হাজার ৭৯২ কোটি টাকার মধ্যে।

গবেষণায় আরো দেখা যায়, সড়ক ও মহাসড়ক খাতে রাজনীতিবিদ, সংশ্লিষ্ট আমলা ও ঠিকাদারের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক আঁতাতের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রমের নীতি নির্ধারণ এবং সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এর ফলে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে আইন লঙ্ঘন ও অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র স্পষ্ট হয়েছে।

টিআইবি জানায়, এসব অনিয়মের কারণে প্রকল্পগুলো উচ্চ ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং নির্মিত সড়ক ও সেতুর মান খারাপ হচ্ছে, যা প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য অর্জনকে ব্যাহত করছে। এর ফলে, জাতীয় সম্পদের অপব্যবহার ও বিপুল অপচয় ঘটেছে।

গবেষণাটি ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে পরিচালনা করা হয় এবং এতে সড়ক নির্মাণ, সেতু নির্মাণ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যবেক্ষণ করা হয়।

Link copied!