ছবি: সংগৃহীত
কুষ্টিয়ার মিরপুরে নিজ ঘর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সুমি আক্তার (২৬)–এর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের বরাত দিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, বিরল রোগজনিত যন্ত্রণায় তিনি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার ভোরে উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সুমি আক্তার আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক গোলাপ রহমানের মেয়ে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলেন। মিরপুর থানার ওসি মো. মমিনুল ইসলাম এই সাবেক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, সুমি আক্তার জন্মগতভাবে ‘ফাইব্রাস ডিসপ্লাসিয়া’—একটি বিরল রোগ যেখানে স্বাভাবিক হাড়ের টিস্যুর পরিবর্তে তন্তুযুক্ত টিস্যু গঠিত হয়—এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সংস্কৃত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করে দেড় মাস আগে থেকে কুষ্টিয়ার আমবাড়িয়ায় নিজ বাড়ি থেকে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ফাইব্রাস ডিসপ্লাসিয়ার কারণে দীর্ঘদিনের যন্ত্রণায় ভুগতে ভুগতে সোমবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয়দের বরাতে মাজিহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থী সুমি ফাইব্রাস ডিস প্লাসিয়া নামে একটি রোগে আক্রান্ত ছিল। সে রাত ৩টা পর্যন্ত নিজ ঘরে লেখাপড়া করেছে। পরে ফজরের নামাজের জন্য ডাকতে গেলে তার ঘরের দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দেখা যায় সে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে রয়েছে।
পরিবারের বরাতে ওসি মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। সহপাঠী এবং গ্রামের বিভিন্ন মানুষের সহায়তায় তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু রোববার রাতে তার শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। ভোরে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ না থাকা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।