দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ‘ঘনিষ্ঠতা’ উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে ভারত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২৮, ২০২৫, ১২:১৭ পিএম

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ‘ঘনিষ্ঠতা’ উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে ভারত

ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। উভয় দেশ নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। সেই সুবাদে ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান এ সম্পর্ক নিয়ে দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়তে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। 

গতকাল বুধবার ‘ওয়াচ ক্লোজলি: এডিটরিয়াল অন দ্য শিফট ইন বাইল্যাটারেল রিলেশন্স বিটুইন পাকিস্তান অ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্পাদকীয়তে নয়াদিল্লিকে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির পরামর্শও দেওয়া হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তখন তার দলের অনেক নেতাও সে দেশে গিয়ে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তাদের অনেকেই সেখানে রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। ভারতের গণমাধ্যমটি সম্পাদকীয়তে বলেছে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশ সফরে গিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটা ছিল ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নাটকীয় পরির্তনের সর্বশেষ পদক্ষেপ। দুই পক্ষ বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছে; তারা কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর মতো বিষয়ে আলোচনা করেছে। 

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ভারতের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে ইসহাক দারের বৈঠক। তিনি জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও সেই ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যারা শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন। বাংলাদেশে ২০২৬ সালের শুরুর দিকেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে পাকিস্তান প্রকাশ্যেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে, যা নিঃসন্দেহে নয়াদিল্লির জন্য উদ্বেগের কারণ। 

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সমালোচকদের একটা বড় অংশের অভিযোগ ছিল ভারতের প্রতি তার অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা। এ কারণেই তার ক্ষমতার ১৫ বছরে অভিযোগকৃত স্বৈরাচারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জনরোষ ধীরে ধীরে ভারতবিরোধী মনোভাব হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। 

ওই সমালোচকদের ভাবতে হবে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রকাশ্যে সখ্য দেখানোর ফল কী হতে পারে। এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী তো এখনও ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা ও গণধর্ষণের ভয়াবহতা থেকে নিজেদের দূরে সরায়নি। 

সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের উদীয়মান প্রভাবশালী শক্তিগুলোর সঙ্গে দিল্লিকেও সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। ভারত অবশ্যই কিছু রাজনৈতিক শক্তির প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে। কিন্তু বাস্তববাদী রাজনীতি ও ভূরাজনীতি, যার প্রবল সমর্থক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এটা দাবি করে যে, ভারতকে ঢাকার সঙ্গে কাজ করার পথ বের করতেই হবে এবং দ্রুত।

Link copied!