রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। এদিকে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যায় স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশের বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবন পর্যন্ত এগিয়ে যায়। সেখানে তারা ভেতরে অবস্থান করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির নেতারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গভবনের সামনে মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও বক্তব্য দিচ্ছেন স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির ব্যানারে আসা নেতাকর্মীরা। পাশেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ‘রক্তিম জুলাই-২০২৪’ ব্যানারে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় অর্ধশত জনতাকে।
এর আগে, ঢাবিতে কর্মসূচি পালনের সময় রাষ্ট্রপতির অপসারণসহ ৪ দাবি জানায় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফ্যাসিবাদের দোসর অবৈধ রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা; সংবিধান বাতিল করা; বিপ্লবী জাতীয় সরকার গঠন করা এবং আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধ করা।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার পরে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’
তবে সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘(পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়ত সময় পাননি।’ এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারীরা।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। একাধিক উপদেষ্টা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্তও করেছেন। রাষ্ট্রপতি ‘মিথ্যাচার’ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তবে প্রতিক্রিয়া, আলোচনা-সমালোচনার মুখে বঙ্গভবন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগকেন্দ্রিক মীমাংসিত বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান।