রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শনিবার (১০ আগস্ট) বিক্ষোভ প্রদর্শকালে চার দফা দাবি তুলে ধরে তা আদায়ে লাগাতর আন্দোলন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দুপুর ২টা থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়।
সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি পাঠ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। ওই দাবিনামায় সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও বৈষম্য নিরসনের পাশাপাশি বলা হয়, সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ শতাংশ সংসদীয় আসন বরাদ্দ করতে হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। এ ছাড়া সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের হামলা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ সচিবালয় সনাতন কমিউনিটির আহ্বায়ক মিটু কুমার রায় বলেন, “রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে নিরাপত্তা দেওয়ার মতো কেউ নেই। প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনেকে বর্ডারে গিয়ে বসে আছে। তাদের সম্মানের সঙ্গে বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। আজ থেকে একটা হিন্দু বাড়ি, মন্দির যেন পাহারা দিতে না হয়। মসজিদের মতো মন্দিরও যেন নিরাপদ থাকে।”
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা মল্লিক বলেন, “আমরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সেখানে বিজয়ী হলেও আমাদের মুক্তি নেই। তাই আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা নিরাপত্তা চাই। সনাতনী সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এ ছাড়া সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। সেখানে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, প্রতিমা, হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মা-বোনদের ধর্ষণ করা হয়। দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়। রাতের আঁধারে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। দ্রুত এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”