জুন ১, ২০২৪, ০৫:৩৯ এএম
রহস্যে ঘেরা আনোয়ারুল আজিম হত্যার পর থেকেই সামনে আসছে একের পর এক লোমহর্ষক তথ্য। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, এমপি আনারকে কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে রিসিভ করা হয়। হত্যার সময় একই ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন শিলাস্তি রহমান।
শুক্রবার (৩১ মে) শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি ওয়ারী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান। কিন্তু আদালত এই ৩ আসামির পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: জড়িতরা অনেকেই নেপালে, অন্য আসামিরাও যেতে পারে: হারুন
এই ৩ আসামিকে করা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি সূত্র জানায়, এমপি আনারকে হত্যার আগে কলকাতার সেই ফ্ল্যাটে ওঠেন শিলাস্তি রহমান। হত্যার সময় ফ্ল্যাটে ছিলেন তিনি। তার দায়িত্ব ছিল এমপি আনোয়ারুল আজিম যখন ফ্ল্যাটটিতে যাবেন তাকে রিসিভ করা। সেই অনুযায়ী শিলাস্তি রহমান ওই ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে রিসিভ করেন। এরপর থেকে আর এমপি আনারকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া (৫৬) জিজ্ঞাসাবাদে ডিবিকে জানায়, তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) শীর্ষস্থানীয় নেতা। খুলনা, ঝিনাইদহ, যশোরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে এমপি আনারের আদর্শের বিরোধ ছিল। এছাড়া ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিনের সঙ্গেও এমপির বিরোধ ছিল। এই দুই বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহিন ও শিমুল ভূঁইয়া আনারকে হত্যার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনা করছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি ও মার্চে দুইবার আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হন। পরে শাহিন ভারতের কলকাতার অভিজাত নিউটাউন এলাকায় ২৫ এপ্রিল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরিকল্পনায় যুক্ত হন শিলাস্তি রহমান। পরে তাদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিং করে শাহিন গত ১০ মে বাংলাদেশে চলে আসেন।
ডিবির রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পরবর্তীতে শিমুল ভূঁইয়া ও শাহিনের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে কৌশলে ব্যবসার কথা বলে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শিমুল ভুঁইয়া অন্য আসামিদের সহায়তায় আনারকে হত্যা করেন। হত্যার পর তার লাশের হাড়-মাংস আলাদা করে মাংসের ছোট ছোট টুকরা করা হয়। পরে সেগুলো ফ্ল্যাটের টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্লাশ করা হয়। এছাড়া হাড়সহ শরীরের অন্যান্য অংশ ট্রলিব্যাগে করে কলকাতার নিউটাউন থেকে দূরে একটি খালে ফেলে দেয় খুনিরা।
গ্রেপ্তারকৃত শিমুল ভুঁইয়া ডিবিকে আরও জানান, এমপি আনারকে হত্যা ও লাশ থেকে হাড়-মাংস আলাদা করার কাজে আসামি ফয়সাল, মোস্তাফিজ ও জিহাদ সরাসরি জড়িত ছিলেন। হাড় ও শরীরের অন্যান্য অংশ দূরে ফেলার কাজে সিয়ামসহ অজ্ঞাতনামা দুই-একজন সরাসরি জড়িত ছিলেন।