জুন ২৯, ২০২৫, ০৬:৪০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জননিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি এবং অবনতির দিকে যাচ্ছে। জবাবদিহিমূলক বিচারিক প্রক্রিয়ার অভাব ও নারীকে অধস্তন হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতাকে উৎসাহিত করছে।
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীর ওপর যৌন নিপীড়ন ও সহিংসতার ঘটনা প্রসঙ্গে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
গত ২৬ জুন মুরাদনগরে এক নারীকে ঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ আজ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে।
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আজ রোববার গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বিবৃতি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারই যথেষ্ট নয়, তাদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টায় নানা মহল সেই ঘৃণ্য কাজেও জড়িয়েছে। উল্টো ভুক্তভোগীকে কলঙ্কিত করা ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের হাতিয়ার করার চেষ্টা চলমান, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে জননিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি; বরং প্রতিনিয়ত তা অবনতির দিকে যাচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। এতে সমাজে ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত সহিংসতার মনস্তত্ত্ব ক্রমে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠছে। নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা শুধু ব্যক্তিগত অপরাধ নয়; বরং এটি সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রতিফলন। এ পরিস্থিতি একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ।
ভুক্তভোগী নারীর সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের পাশাপাশি মুরাদনগরের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ছবি ও ভিডিও দ্রুত অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে কমিটি। এ ছাড়া নারীর প্রতি সহিংসতাকারী যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, দেশের প্রতিটি নারী নির্ভয়ে, সম্মানের সঙ্গে এবং নিরাপদে বসবাস করতে পারলে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সভ্য সমাজ গড়ে উঠবে।