কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্যাকেজে প্রতি মাসে খাদ্য রেশন ৮ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১০ ডলার করার ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
সোমবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার ডব্লিউএফপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডব্লিউএফপি কক্সবাজারের সব রোহিঙ্গার জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য সহায়তার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে জনপ্রতি খাদ্য রেশন ৮ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১০ ডলার কররে এবং ধীরে ধীরে খাদ্য সহায়তা প্যাকেজে স্থানীয় খাবার চাল অন্তর্ভুক্ত করবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেলি বলেছেন, ‘২০২৩ সাল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ একটি বছর ছিল। বছরটি তারা একাধিক অগ্নিকাণ্ড, ঘূর্ণিঝড় ও প্রথমবারের মতো রেশন কর্তনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেছে। এর ফলে আশ্রয়শিবিরে খাদ্য ও পুষ্টির জোগান হ্রাস পায়—যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এর মধ্যেই দাতা সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা এখন এই খাদ্য সহায়তা বাড়াতে পারি এবং খাদ্য সহায়তা প্যাকেজে স্থানীয় ও টেকসই খাবার হিসেবে চাল অন্তর্ভুক্ত করতে পারি।’
অর্থের জোগান কমে যাওয়ায় ২০২৩ সালের মার্চে কক্সবাজার ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের জন্য জনপ্রতি খাদ্য রেশন ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার এবং জুনে আরও কমিয়ে ৮ ডলার করা হয়।
এতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি তীব্র আকার ধারণ করে। ডব্লিউএইওর জরুরি শ্রেণীবিভাগ অনুসারে, সর্বশেষ পুষ্টি সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলগুলোতে দেখা যায় যে, বিশ্বব্যাপী তীব্র অপুষ্টি (জিএএম) বেড়েছে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০১৭ সালের শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ এবং এটি ১৫ শতাংশের জরুরিসীমা ছাড়িয়ে গেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রেশন বাড়ানোর পাশাপাশি ডব্লিউএফপি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য স্থানীয় খাবার চাল বিতরণ শুরু করবে। প্রথমে একটি বা দুটি শিবিরে এ কার্যক্রম শুরু হবে এবং ধীরে ধীরে কক্সবাজার ও ভাসানচর দ্বীপের সমস্ত ক্যাম্পেই তা বিস্তৃত হবে।
স্কালপেলি বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহায়তা করার সময় রোহিঙ্গাদের প্রতি সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি। এই বাংলাদেশিরা এত বছর ধরে এত উদারভাবে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা করেছেন। আমাদের সমস্ত দাতাদের প্রতি তাদের অটল সমর্থন ও সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা অশেষ কৃতজ্ঞ। ২০২৪ সালে রোহিঙ্গাদের পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর রেশন সরবরাহ নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে আমরা তাদের ওপর নির্ভর করছি।’