মার্চ ১৭, ২০২৫, ১১:৪১ এএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ মেট্রোরেলের চার জন কর্মীকে মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগের পর কাজে ফিরেছেন মেট্রোরেলের কর্মীরা।
সোমবার, ১৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে মেট্রোরেলের একক যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মিনিস্ট্রি একটি কমিটি করেছে। যারা এ ঘটনায় জড়িত- তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এরইমধ্যে এমআরটি পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ খবর সমকাল।
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট বিক্রি করছেন কর্মীরা। এক টিকিট মেশিন অপারেটর (টিএমও) বলেন, ‘আমাদের এমডি স্যার এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা আবার কাজ শুরু করেছি।’
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের এমডি ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমি প্রতিটি স্টেশন ঘুরেছি। সমস্যা তো ছিল। কিন্তু এখন সমস্যা মিটে গেছে। আসলে ট্রেন চলাচলে তো সমস্যা হয়নি একেবারেই। কর্মচারীদের কিছু সমস্যা ছিল। এখন পরিস্থিতি আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেছে।’
এদিকে গতকাল রাতে কর্মবিরতির ঘোষণা দিলেও সোমবার সকাল থেকে শিডিউল মোতাবেক চলছে মেট্রোরেল। কোনো কোনো কাউন্টারে লোক থাকলেও তারা টিকিট বিক্রির কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন। এর ফলে টিকিট ছাড়াও অনেকে চলাচল করেন বলে জানা গেছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. তরিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠি। কিন্তু কাউন্টারে লোক থাকলেও তারা টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন। ফলে টিকিট ছাড়াই ফার্মগেটে আসি।’
এর আগে গতকাল রাত দুইটার দিকে ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ’-এর ব্যানারে ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, রোববার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে দুজন নারী পরিচয়পত্র না দেখিয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে, স্টেশনের সুইং গেইট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। নির্ধারিত পোশাক পরিহিত না হওয়ায় তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা সুইং গেইট দিয়ে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান। পরবর্তীতে পুলিশের এপিবিএন দুইজন সদস্য সুইং গেইট ব্যবহার করে, তা না লাগিয়ে চলে যান। মেট্রোর কর্মীরা কারণ জানতে চাইলে, তারা এবং কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে তর্কে জড়ান। কর্মরত কর্মীর কাঁধে বন্ধুক দিয়ে আঘাত করে। আরেকজন কর্মীকে এমআরটি পুলিশ বক্সে তুলে নিয়ে মারধর করে। এছাড়াও বন্দুক তাক করে গুলি করার হুমকি দেয়। পরে উপস্থিত অন্যান্য কর্মী ও যাত্রীরা এমআরটি পুলিশের হাত থেকে কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে।
এর প্রেক্ষিতে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত এবং পরিদর্শক রঞ্জিত, কন্সটেবল শাস্তি দিতে হবে। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এমআরটি পুলিশ বিলোপ করে মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় নিজস্ব বাহিনী গঠন করতে হবে। স্টেশনে দায়িত্ব পালন করা মেট্রো কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয়পত্র এবং অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি স্টেশনের পেইড জোনে প্রবেশ করতে পারবে না। আহত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মেট্রোরেলের সব স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবেন। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।