অপেক্ষার নয় বছর: কবে মিলবে বিচার!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৮, ২০২৩, ০৩:৪৬ পিএম

অপেক্ষার নয় বছর: কবে মিলবে বিচার!

নয় বছর পার হলেও বিচার পায়নি খুন হওয়া টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের পরিবার। এই কষ্ট মনে নিয়েই নবম মৃত্যুবার্ষিকী পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে এই নেতার পরিবার ও জেলা আওয়ামী লীগ।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কাছে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। 

টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলাটি নিয়ে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) এস আকবর খান বলেন, এ পর্যন্ত ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রয়েছে।

মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ বলেন, ‘আসামিরা প্রভাবশালী। তারা নানাভাবে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার বিচার পেতে আর কত অপেক্ষা করতে হবে? দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি।’

এই মামলায় জড়িত থাকা সন্দেহে ২০১৪ সালে আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা এবং মোহাম্মদ আলী নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এই হত্যার সাথে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান ওরফে মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান ওরফে কাকন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি সানিয়াত খান ওরফে বাপ্পার জড়িত আছে বলে জানা যায়। 

২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য আমানুর রহমানরা চার ভাইসহ ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আমানুর রহমান খান আত্মসমর্পণ করলে তিন বছর কারাগারে থাকতে হয় তাকে। এখন তিনি জামিনে মুক্ত। তার অপর ভাই সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান দুই বছর আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এখন কারাগারে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও কারাগারে রয়েছেন আলমগীর হোসেনও। 

আমানুরের অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান ও সানিয়াত খানসহ মো. কবির এবং ছানোয়ার হোসেন পলাতক রয়েছেন। অন্য আসামিদের মধ্যে আনিসুর রহমান রাজা ও মো. সমীর কারাগারে মারা গেছেন।

জামিনে রয়েছেন- মোহাম্মদ আলী, মাসুদুর রহমান, নাসির উদ্দিন নুরু, ফরিদ আহমেদ ও বাবু।

এই হত্যা মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলী মনিরুল ইসলাম খান বলেন, বাদী, চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেটসহ এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। তাদের জেরাও শেষ হয়েছে।

এখন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দুই-একজনের সাক্ষ্য হলেই মামলাটি যুক্তিতর্কে যাবে। তারপর রায় হবে বলে জানান আইনজীবী।

টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনি জানান, দলের পক্ষ থেকে সকালে দলীয় কার্যালয়ে কোরআন খতম, শোকযাত্রাসহ কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শহীদ মিনারে সমাবেশ ও গরিবদের খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছে।

ফারুক আহমেদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার পরিবারের পক্ষ থেকে কলেজ পাড়ার বাসায় কোরআন খতম ও দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

Link copied!