বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন পছন্দের ছেলেকে। কিন্তু বিচারে বসে বিয়ে করতে হয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে! শনিবার এমন এক ঘটনার পর রবিবার (২৭ জুন) সেই চেয়ারম্যানকে ডিভোর্স দিয়েছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক সেই কিশোরী।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির সেই কিশোরীর (১৪) পালিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের (৬০) কাছে বিচার চাইতে যান মেয়ের বাবা। শাহিন হাওলাদার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। মেয়ের বাবা জানায়, যিনি বিয়ে পড়িয়েছেন তাঁর মাধ্যমে আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে পরিবারের কাছে ফিরেছে এই কিশোরী।
ওই কিশোরী শনিবার জানান, চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলাম পছন্দের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে। কিন্তু বিয়ে করতে হয়েছে চেয়ারম্যানকে। আমি এক রাত চেয়ারম্যানের বাসায় থাকলেও কোনোভাবেই তাঁকে আমি স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারিনি। চেয়ারম্যান তা বুঝতে পেরে তালাক দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
সালিস বৈঠকে মেয়ের বাবা কোনোভাবেই মেয়ের পছন্দের ছেলের কাছে বিয়ে দিতে রাজি ছিল না বলে জানান চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। তিনি বলেন, পরিস্থিতি দেখে কাজী ডেকে বিয়ে করেছিলাম। কোন প্রভাব কিংবা জোর করিনি। মেয়ে বিয়েটা ভালোভাবে মেনে নিচ্ছিল না, সে কারণে যার মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে (কাজী) তাকে ডেকে তালাকের ব্যবস্থা করি।
কাজি ডেকে শুক্রবার দুপুরে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করেন চেয়ারম্যান। বিয়ের কাবিননামায় মেয়েটির জন্মতারিখ উল্লেখ করা হয়, ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে থাকা জন্মনিবন্ধন ও পঞ্চম শ্রেণি পাসের সনদ বলছে, মেয়েটির জন্ম ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান চেয়ারম্যান। তবে বাড়িতে তাঁর প্রথম স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা ছিলেন না।
এদিকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিয়ের খবর শুনে শুক্রবার কিশোরীর প্রেমিক তরুণটি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অচেতন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ফিরোজ আলম।