অক্টোবর ৪, ২০২২, ১০:১২ পিএম
দেশে স্মরণকালের ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাইছে না বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় গ্রিডে এই বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে রাজধানীসহ দেশের একটি বড় অংশই। ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাপক ছন্দপতন ঘটে। বিশেষ করে রাজধানীতে ডিজেল ও পানি সঙ্কটে দিশেহারা হয়ে পড়ে মানুষ।
দেশে একসাথে হঠাৎ করে কেন এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়?—এমন প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত ফ্রিকোয়েন্সিতে গরমিলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। বিদ্যুৎ যে তরঙ্গে প্রবাহিত হয়, কোনও কারণে এর হেরফের হলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সাধারণত মিলি সেকেণ্ডের মধ্যেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। এমন ঘটনা প্রতিরোধ করার মতো নানা ধরনের ব্যবস্থা থাকলেও বিভিন্ন দেশে মাঝে মাঝে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো সঞ্চালন লাইনে হয়তো একসাথে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে। যদি কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে এর দশ ভাগ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে গ্রিড ট্রিপ (বিপর্যয়) করার মতো ঘটনা ঘটে থাকে।
বাংলাদেশে ৫০ মেগা হার্টজ তরঙ্গে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। কোনো কারণে এই তরঙ্গ যদি ৪৮-এ নেমে আসে বা ৫২-তে উঠে যায়, তাহলেই ট্রিপের ঘটনা ঘটতে পারে। এর আগে ২০১৪ সালে যখন বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছিল তখন ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যবস্থা কয়েক মিলি সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এতে জাতীয় গ্রিড ট্রিপ করে। একবার গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। বড় বিপর্যয় ঠেকাতে কেন্দ্রগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে। বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হলে কারিগরি কারণে সেটি চালু হতে সময় লাগে। ফলে চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় না।
পাওয়ার সেল বিভাগের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন গণমাধ্যমে বলছেন, মঙ্গলবার কেন এই ঘটনা ঘটেছে সেটি এখনও আমরা জানতে পারিনি। তদন্ত করার আগে এটি বলা সম্ভব নয়। তবে ফ্রিকোয়েন্সিতে গরমিল হলেই এটি হতে পারে। ফ্রিকোয়েন্সিতে গরমিল নানা কারণে হয়। কোথাও সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিলে বা হুট করে কোথাও থেকে সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এমন হতে পারে। গ্রিড লাইনের কোন একটি অংশ কোথাও বিকল হয়ে গেলেও এটি হতে পারে। নানাবিধ কারণেই এমনটা ঘটতে পারে।