নিরাপদ অভিবাসন বা নিয়মমাফিক জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় বাধা অজ্ঞতা এবং জনসচেতনতার অভাব বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।শনিবার ঢাকা জেলা প্রশাসনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক এক সচেতনতা সভায় আলোচকরা এই মতামত ব্যক্ত করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. নাশিদ রিজওয়ানা মনির।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইলিয়াস মেহেদীর সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, জনশক্তি রপ্তানি বিষয়ক সরকারের নানামুখী কার্যক্রম থাকলেও দেশে অভিবাসন প্রক্রিয়া এখনো নিরাপদ হয়নি৷ নানা আইন-কানুন হলেও বিদেশে পাড়ি দিতে গিয়ে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছেন মানুষ, তার অন্যতম বড় কারণ মানুষের মাঝে এবিষয়ে সচেতনতার অভাব।
ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনে অনেক বাংলাদেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, নানারকম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন আবার অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন কেবলমাত্র সঠিক নির্দেশনা না জানার বা না মানার কারণে, এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. নাশিদ রিজওয়ানা মনির বলেন, “বৈদেশিক কর্মসংস্থান কেবল যে দেশে বেকারত্ব দূর করছে তা-ই নয়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বা বৈদেশিক মুদ্রাই দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে বড় ভূমিকা রাখছে। তাই, বিদেশে গিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর চিন্তা করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আপনার অভিবাসন যেন অবশ্যই নিরাপদ হয়, সে বিষয়টা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।”
এসময় তিনি বিদেশে যাওয়ার আগে নিরাপদ অভিবাসনের সকল প্রক্রিয়া ভালভাবে জেনে নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যয় চার্ট অনুযায়ী বিশ্বের যেকোন দেশেই যান না কেন আড়াইলাখের অধিক ব্যয় হবার কথা না উল্লেখ করে ড. নাশিদ আরো বলেন, “কখনওই জমি বা সম্পত্তি বিক্রি করে বা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বিদেশ যাবেন না। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে যে কোন ব্যক্তি দুই থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন বিদেশ যেতে চাইলে। আর সঠিক কাগজপত্র বা দলীলপত্র ছাড়া কাউকেই টাকা দিয়ে প্রতারিত হবেন না।”
ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, সরকার আপনাদের সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট কিছু বিধিমালা এবং নিয়মকানুন করেছেন। সেই ধাপগুলো মেনে চললে অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা নাই।
দক্ষ জনশক্তির বিকল্প নাই মন্তব্য কেরে তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় আমাদের শ্রমিকরা দক্ষতা অর্জন না করেই নির্দিষ্ট কিছু চাকরি নিয়ে বিদেশ চলে যান। সেখানে গিয়ে তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ দেখাতে পারেন না। তাদের বেতনভাতা কেটে রাখা হয় এবং তাদের মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করা হয়। অনেক সময় প্রশাসন এ বিষয়ে জানতেও পারে না বা ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।”
মো. শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, "সরকার জনগণকে সচেতন করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং খুব শীঘ্রই আমরা ইউনিয়ন লেভেলেও মানুষকে সচেতন করার কার্যক্রম হাতে নিব।"