ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। বুধবার ইউনূস সেন্টার থেকে পাঠানো জবাবের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের জবাব’।
৬০ বছর বয়স হলেও গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে পদত্যাগ না করে পাল্টা মামলা করা প্রসঙ্গে জবাবে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে পদত্যাগ করতে বলায় গ্রামীণ ব্যাংকের মৌলিক আইনি মর্যাদা রক্ষায় তিনি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন। এর সঙ্গে চাকরি ধরে রাখার কোনো সম্পর্ক নেই।
হিলারি ক্লিনটনসহ বিশিষ্টজনদের দিয়ে ফোন করানোর বিষয়ে বলা হয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসের অপসারণ বিশ্বব্যাপী সংবাদে পরিণত হয়েছিল। তাঁরা অধ্যাপক ইউনূসকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না, তাঁরা দেখতে চাইছিলেন গ্রামীণ কর্মসূচিগুলোর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। এর সঙ্গে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বিষয়টিকে মিশিয়ে ফেলে একটা সম্পূর্ণ ভিন্ন কাহিনি সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সব মানুষের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন, তিনিও এ স্বপ্নে বিশ্বাসী। তিনি এই ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দনও জানান।
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগ এবং একজন সম্পাদককে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বৈঠক করার বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ দুই বন্ধুর খেয়ালখুশি কিংবা একজন পত্রিকা সম্পাদকের সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার ওপরও নির্ভর করে না। কোনো ধরনের বৈঠকে করা নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত।
মুহাম্মদ ইউনূস একটি ফাউন্ডেশনকে ছয় মিলিয়ন ডলার অর্থ দেওয়া এবং এক চেকে ছয় কোটি টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে নেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে জবাবে বলা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত এবং মানহানিকর অভিযোগ। তা ছাড়া আগেই সরকার অধ্যাপক ইউনূসের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। সুতরাং সব তথ্যই সরকারের কাছে আছে।
জবাবে আরও বলা হয়েছে, অধ্যাপক ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি হিসেবে বেতনের বাইরে কোনো অর্থ গ্রহণ করেননি। তিনি নিয়মিতভাবে কর রিটার্ন জমা দেন ও কর পরিশোধ করেন। আর তাঁর আয়ের উৎস হচ্ছে ভাষণের উচ্চ ফি, ২৫ ভাষায় প্রকাশিত বইয়ের রয়্যালটি এবং এসব অর্থ স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে আয়। সব আয়ই ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে ‘ইউনূস’ বা ‘গ্রামীণ’ থাকলেও এর ব্যবহার শুধু ইউনূসের দর্শনের প্রতি উদ্যোক্তাদের একনিষ্ঠতার বহিঃপ্রকাশ। এর সঙ্গে মালিকানার সম্পর্ক নেই। আর অধ্যাপক ইউনূস কখনোই ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে কোনো অঙ্কের কোনো অনুদান দেননি। তিনি কখনোই গ্রামীণফোনের শেয়ারের মালিক ছিলেন না।