পরীক্ষা না দিয়েই মেধাতালিকায় ৫ম স্থানে!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম

পরীক্ষা না দিয়েই মেধাতালিকায় ৫ম স্থানে!

দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী হাবিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর তোলপাড় এলাকাজুড়ে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে এক শিক্ষার্থী! এ ঘটনা শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রশাসনের চোখে পড়ে। ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

জানা যায়, ধামতী হাবিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. হারুন-অর রশিদ চৌধুরীর ছেলে সপ্তম শ্রেণির অনিয়মিত ছাত্র মো. রাকিব চৌধুরী। সপ্তম শ্রেণির খ বিভাগে তার রোল নম্বর ছিল ১১। 

বিদ্যালয়ের নথিপত্রে দেখা যায়, পরীক্ষার সিট প্ল্যানে তার নামে কোনো সিট বরাদ্দ ছিল না। সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষার হলে সরবরাহ করা উপস্থিতির তালিকায় স্বাক্ষরের ঘরেও রাকিবের কোনো স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি। অথচ পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও বাংলায় ৫২, ইংরেজিতে ৫১, গণিতে ৬৬, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় ৬২, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ে ৩৩, সাধারণ বিজ্ঞানে ৫০, কৃষি শিক্ষায় ৭৬, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষায় ৩২সহ ৭৫০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত মোট ৪২২ নম্বর হলেও ১০ নম্বর বাড়িয়ে ৪৩২ নম্বর দেখিয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থানে উন্নীত করা হয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ফলাফল ঘোষণার সময় ওই ছাত্রকে পঞ্চম স্থান অধিকার করার ঘোষণা দিলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায় এবং এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় মো. রাকিব চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে সে। 

অর্ধবার্ষিক (প্রাক নির্বাচনি) পরীক্ষায় ফলাফলে বাংলায় প্রথম পত্রে ১৯, ইংরেজী প্রথম পত্রে ০৩, গণিতে ১১, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষায় ৩০, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ে ২০, সাধারণ বিজ্ঞানে ১৫, কৃষি শিক্ষায় ১৫, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিদ্যায় ১৭ সহ ৭৫০ নম্বরের মধ্যে ১৩৩ নম্বর পায় রাকিব। 

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন এবং বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসে সমঝোতা করে ফেলেছি।’

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘আমরা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক, অভিভাবক ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিদ্যালয়ের স্বার্থে সমঝোতা বৈঠকে শেষ করেছি। যে শিক্ষিকা এ কাজটি করেছেন এবং যার সন্তান বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য- তারা ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে আর এ জাতীয় অন্যায় ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা করবেন না মর্মে লিখিত দেওয়ার পর সমাধান করি।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আব্দুল ওয়াহেদ মো. সালেহ বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজি চক্রবর্তী বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক ব্যবস্থা নেব।’

Link copied!