পৌর নির্বাচন: বেশিরভাগ জিতেছে সরকারদলের প্রার্থী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১, ১১:০৭ এএম

পৌর নির্বাচন: বেশিরভাগ জিতেছে সরকারদলের প্রার্থী

রবিবার সকাল ৮টা থেকে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত পৌরসভায় ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বেশিরভাগ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও কয়েকটি পৌরসভায় বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয় পেয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় এবং গতকাল সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং অর্ধশত সমর্থক-কর্মীর আহত হওয়ার মধ্য দিয়ে ওই ভোট অনুষ্ঠিত হয়। 

বাগেরহাট পৌরসভা

বাগেরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী খান হাবিবুর রহমান ১৯ হাজার ২৩৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির মো. সাইদ নিয়াজ হোসেন শৈবাল পেয়েছেন ৩৫৯ ভোট। এই পৌরসভায় প্রথমবারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়।

এই নিয়ে বাগেরহাট পৌরসভায় পঞ্চমবারের মত খান হাবিবুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হলেন।

চাঁদপুরে কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভা

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কচুয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাজমুল আলম স্বপন ১০ হাজার ২১২ ভোট পেয়ে মেয়র হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আহসান হাবীব প্রাঞ্জল মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে এক হাজার ৫১ ভোট পেয়েছেন। আর ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে ৬৪৭ ভোট পেয়েছেন হুমায়ূন কবীর প্রধান।

ফরিদগঞ্জ

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন বলেন, আবুল খায়ের পাটোয়ারী ১৭ হাজার ভোট পেয়ে মেয়র হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইমাম হোসেন পাটওয়ারী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৭০৮ ভোট। আর ইসলামী আন্দোলনের দেলোয়ার হোসেন পেয়েছেন হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৭১৮ ভোট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরসভায় মেয়র হয়েছেন আওয়ামী লীগের মো. তাকজিল খলিফা কাজল। রবিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, তাকজিল খলিফা কাজল পেয়েছেন ১৫ হাজার ১৪৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু পেয়েছেন ৭৭৮ ভোট। 

ফরিদপুরের নগরকান্দা

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনে মেয়র পদে ২১৯৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিমাই সরকার। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুদুর রহমান পেয়েছেন ১২২৮ ভোট।

যশোরের চৌগাছা ও বাঘারপাড়া

জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ন আহমেদ বলেন, চৌগাছা পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল ছয় হাজার ৫৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা জামায়াতের সহ-সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পেয়েছেন তিন হাজার ১৭ ভোট। বিএনপির প্রার্থী আব্দুল হালিম চঞ্চল পেয়েছেন এক হাজার ১০৯ ভোট।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, বাঘারপাড়া পৌরসভায় দ্বিতীয়বারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুজ্জামান বাচ্চু। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ২৫৫ ভোট। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তাহের সিদ্দিকী জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ১০৮ ভোট।

জয়পুরহাটের দুই পৌরসভা

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, কালাই পৌরসভায় নৌকার প্রার্থী রাবেয়া সুলতানা ৯ হাজার ১৭৭টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির প্রার্থী সাজ্জাদুর রহমান সোহেল পেয়েছেন ৮০০ ভোট।

নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, আক্কেলপুর পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে শহীদুল আলম আট হাজার ২৬৮ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আলমগীর চৌধুরী বাদশা ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ৫৮৬ ভোট।

লালমনিরহাটে স্বতন্ত্র 

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হাসান ফল ঘোষণায় বলেন, লালমনিরহাট পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন ১১ হাজার ০৩৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের মোফাজ্জল হোসেন পেয়েছেন নয় হাজার ৫৫ ভোট।

পাটগ্রাম

স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভায় আওয়ামী লীগের রাশেদুল ইসলাম সুইট ১২ হাজার ৬১১ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম মেজবাহ উদ্দিন মেজু ১০ হাজার ৫২৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম ধানের শীষের প্রার্থী শাহেদ আলী পটু পেয়েছেন ৩৮৭ ভোট।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা

জেলা নিবার্চন কর্মকর্তা ও রির্টানিং কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ ফল ঘোষণায় বলেন, মাটিরাঙ্গায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামছুল হক পাঁচ হাজার ৯৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএম জাহাঙ্গীর আলম মোবাইল প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৭৫৮ ভোট।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর ও কালিহাতী

জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান বলেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী রকিবুল হক ছানা ১৮ হাজার ৯৬৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী কেএম গিয়াস উদ্দিন পেয়েছেন চার হাজার ২৮৭ ভোট।

নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, কালিহাতী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার ১১ হাজার ৩১০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির আকবর জব্বার পেয়েছেন সাত হাজার ৭৯ ভোট।

শেরপুর ও শেরপুরের শ্রীবরদী

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে ২৯ হাজার ৬৩৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। তার নিকটতম বিএনপির এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ পেয়েছেন পেয়েছেন আট হাজার ৭৯৬ ভোট।

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, শ্রীবরদী পৌরসভায় ছয় হাজার ৯৯০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী লাল মিয়া। তার নিকটতম বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাকিম পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪২ ভোট।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, হোসেনপুর ও বাজিতপুর

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম বলেন, করিমগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মুসলেহ উদ্দিন ১০ হাজার ৮৫০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৫০ ভোট।

নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, হোসেনপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল কাইয়ুম খোকন সাত হাজার ৫১৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ হোসেন হাছু পেয়েছেন চার হাজার ৪৫১ ভোট।

নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, বাজিতপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ার হোসেন ১৪ হাজার ৫৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির এহেসান কুফিয়া পেয়েছেন ৬৯৭ ভোট।

ঠাকুরগাঁওয়ের ২ পৌরসভা

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা জিলহাজ উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা ২৬ হাজার ৫০২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শরিফুল ইসলাম শরিফ পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৩৩৩ ভোট। তাছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন এক হাজার ৬৩ ভোট।

রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, রাণীশংকৈল পৌরসভায় নৌকার মোস্তাফিজুর রহমান দুই হাজার ৮০৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মাহমুদুন নবী পান্না বিশ্বাস পেয়েছেন ৪৪৮ ভোট।

সাতক্ষীরার মেয়র হলেন বিএনপির প্রার্থী

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নাজমুল কবির বলেন, ২৫ হাজার ৮৮ ভোট পেয়ে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির তাজকিন আহমেদ চিশতী। নিকটতম আওয়ামী লীগের শেখ নাসেরুল হক পেয়েছেন ১৩ হাজার ৫০ ভোট।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেওয়ান মোহাম্মদ সরওয়ার বলেন, ত্রিশাল পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এবিএম আনিসুজ্জামান আনিস জগ প্রতীক নিয়ে ১২ হাজার ২০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনীত নবী নেওয়াজ সরকার পেয়েছেন সাত হাজার ৪৮৬ ভোট।

Link copied!