জুন ২৪, ২০২৩, ০৭:৩১ পিএম
ভারত থেকে প্রেমের টানে বাংলাদেশে চলে এসেছেন নার্গিসা বেগম (২৮)। তারপর প্রেমিক সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দাদপুর গ্রামের জুয়েল সরকারের (২৪) গত ১ জুন বিয়ে হয় তার। অন্যদিকে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন নার্গিসা বেগমের স্বামী ফজলুর রহমান মীর।
গত বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বাসিন্দা ফজলুর রহমান মীর পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে উল্লাপাড়া থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে উল্লাপাড়া মডেল থানার ওসি নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নার্গিসা বেগমের সাথে উল্লাপাড়ার দাদপুর গ্রামের ইরান সরকারের ছেলে জুয়েলের পরিচয় হয়। অবিবাহিত পরিচয় দেন নার্গিসা। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। স্বামী ও আট বছরের সন্তানকে রেখে নার্গিসা বাংলাদেশে চলে আসেন। নিজের নাম নাইসা মল্লিক নামে পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ভারত থেকে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন এই নারী।
উল্লাপাড়ার দুর্গানগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবাদুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল ভারত থেকে ওই নারীর সাবেক স্বামী এসেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা হচ্ছে। তবে ভারতের স্বামীর সাথে ওই নারী যেতেও চাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রীকে নিয়ে যেতে এক নারী কাউন্সিলরসহ থানায় আসেন নার্গিসার ভারতীয় স্বামী। তার স্ত্রী ভারতে ফিরে যেতে চায় বলে দাবি করেন তিনি। তার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
স্থানীয় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি স্বামী জুয়েল সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘যদি স্ত্রী যেতে চায় তাহলে কোনো আপত্তি নেই’’।
এ প্রসঙ্গে জুয়েলের বাবা ইরান সরকার বলেন, ‘আমরা তো এত কিছু জানতাম না। ভেবেছিলাম মেয়েটি অবিবাহিত। আমার ছেলের সাথে বিয়ে হওয়ার পর জানতে পারি, ভারতে তার স্বামী ও সন্তান আছে। যেভাবেই হোক মেয়েটি এখানে এসেছে বাংলাদেশের আইন মোতাবেক বিয়েও হয়েছে। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা তাকে ত্যাগ করতে পারি না। তবে ভারত থেকে আসা স্বামীর সাথে যদি যেতে চায়, আমাদের কোনো কিছু করার নেই।’
পরে ভারত থেকে আসা নারীর সঙ্গে পুলিশ কথা বলে জানতে পারে, তার ভিসা, পাসপোর্ট, ডিভোর্স ও বিয়ের কাগজপত্র আছে।’
ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই নারী পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তার ভারতীয় স্বামী ফজলুর রহমান মীর আগেও একটা বিয়ে করেছেন। তার বড় বড় সন্তান রয়েছে। প্রতিনিয়তই মদ্যপ হয়ে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। তাকে ডিভোর্স দিয়ে বৈধ পথে এখানে এসে জুয়েল সরকারকে বিয়ে করেছেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রেমের টানে ভারতীয় নারী বাংলাদেশে এমন সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ভারতের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি উঠে আসে।
সেসব সংবাদে জানা যায়, ১২ বছর আগে বাঁকুড়া জেলার ফজলুর রহমান মীরের সাথে দানগড় ধারেশা মল্লিক পাড়ার বাসিন্দা নার্গিসা বেগম মল্লিকের বিয়ে হয়। আট বছর বয়সী একটি সন্তানও রয়েছে। হঠাৎ স্ত্রী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় দমদুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করেন স্বামী।