মিয়ানমার কথা রাখেনি, তবে চাপে পড়লেই কথা শোনে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২১, ২০২১, ১০:৩০ পিএম

মিয়ানমার কথা রাখেনি, তবে চাপে পড়লেই কথা শোনে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের সঙ্গে বছরের পর বছর মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে চাইলেও কথা রাখেনি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারের হাতে। আর চাপে পড়লেই মিয়ানমার কথা শোনে। তাই বিশ্বের উচিত দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টি করা।”

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে রোহিঙ্গা সংকট এবং প্রত্যাবর্তন বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যায় মেজর জিয়া ও তার সহযোগেীকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এইভাবে পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র অনেক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে। আমি যতদূর শুনেছিলাম, ওসামা বিন লাদেনের খোঁজও তারা পুরস্কার ঘোষণার মাধ্যমেই পেয়েছিলো।”

এসময় তিনি বলেন, “আমাদেরও তো বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ধরিয়ে দিতে পারলে বা খোঁজ দিতে পারলে পুরষ্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া আছে।”

রোহিঙ্গা ইস্যুটি একটি আন্তজার্তিক বিষয় এবং তাদেরকে নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনে আন্তজার্তিক মহলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমার শুরু করেছে, তাদেরকেই এটি শেষ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে একসময় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ছিল। তারা সম্পদশালী ছিল। কিন্তু এখন তারা রাষ্ট্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে।”

রোহিঙ্গা ও মিয়ানমারের গণহত্যা ইস্যুতে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো নিরব রয়েছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে আন্তজার্তিক মহলের প্রয়োজনীয় ভুমিকা রাখতে হবে। উন্নয়ন সহযোগি কিছু দেশ রয়েছে যারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে পুঁজি করে নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াচ্ছে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলাদেশ দীর্ঘ দিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। অথচ কিছু পশ্চিমা দেশ এখনো মিয়ানমারের সঙ্গে পুরোদমে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার।”

তবে সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেওয়ায় জার্মানির প্রশংসা করে অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্রগুলোকেও একই ধরণের পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মিয়ানমার ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ আড়াই লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে ঠেলে দেয়  জানিয়ে ড. এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের ওপর কোনো অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেনি। বরং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।”

মিয়ানমার আমাদের শত্রু নয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বছরের পর বছর মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছে। কিন্তু কথা রাখেনি। এমনকি যখন মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন বিশ্বের কোনো দেশ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তখন তাদের পাশে ছিল বাংলাদেশ। একমাত্র বাংলাদেশ তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে।”

Link copied!