৫ আগস্টের পর ৩৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার কোটি টাকা জব্দ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০২:০১ পিএম

৫ আগস্টের পর ৩৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ১৫ হাজার কোটি টাকা জব্দ

ফাইল ছবি

অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩৬৬ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ। ১১২টি মামলার বিপরীতে এই ব্যাংক হিসাবগুলো জব্দ করা হয়েছে। খবর দ্য ডেইলি স্টার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বড় ব্যবসায়ীদের হিসাব জব্দ করার জন্য ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করতে শুরু করে বিএফআইইউ।

সন্দেহজনক লেনদেনসহ প্রায় ২২৫টি তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ও দুর্নীতি দমন কমিশনে- দুদক পাঠানো হয়।

জব্দ করা ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের হিসাবও রয়েছে।

এছাড়া এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্য; সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্য; শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান ও তার স্ত্রী; বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আকবর সোবহান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন-সিআরআই এবং সিআরআইয়ের ‘ইয়াং বাংলা’ প্রকল্পের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়েছে।

এই তালিকায় আরও আছে সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ ও নাবিল গ্রুপের মালিক ও প্রতিষ্ঠাতাদের ব্যাংক হিসাব।

যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে তাদের মধ্যে আরও আছেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তামাল; এনআরবিসি ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমাম; ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম মোকাম্মেল হক চৌধুরী; পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত এবং এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার।

সাংবাদিকদের মধ্যে শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা নাঈমুল ইসলাম খান এবং একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান নির্বাহী ও প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

বিএফআইইউ কর্মকর্তারা জানান, যদি কোনো জব্দ করা হিসাবে সন্দেহজনক লেনদেন বা অর্থ পাচারের প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাহলে তা আবার খুলে দেওয়া হবে।

বিএফআইইউ এখন বেশ কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপের অর্থ পাচার, ঋণ জালিয়াতি এবং সরকারি ও আমানতকারীদের তহবিল আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত করছে।

ইতিমধ্যে এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের ওপর তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিআইডি ও দুদকে এসব প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

বেশ কিছু ব্যবসায়িক গ্রুপের অর্থ পাচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বিএফআইইউ।

Link copied!