শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, দাবি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০১:১৯ পিএম

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা, দাবি ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাতটি বড় সরকারি কলেজ একীভূত করে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে রাজধানীর শিক্ষা ভবনসংলগ্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন ওই সাত কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী। তারা বলছেন, অধ্যাদেশ জারির ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা ছাড়বেন না।

সোমবার, ১৩ অক্টোবর এই কর্মসূচিকে ঘিরে সচিবালয় অভিমুখে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এ কারণে ওই পথ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, খসড়া অধ্যাদেশের বিষয়ে ছয় হাজারের বেশি মতামত পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন এগুলো সংকলন ও বিশ্লেষণের কাজ চলছে। এরপর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা–সংশ্লিষ্ট সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অংশীজনের সঙ্গে শিগগির ধারাবাহিক পরামর্শ সভা করা হবে।

২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার বড় সাতটি সরকারি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। তখন থেকেই সংকট ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত করার আগেই অধিভুক্তি বাতিল করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এখন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তীব্যবস্থায় সাত কলেজের কার্যক্রম চলছে। এখন নতুন করে সংকটের মুখে পড়েছে কলেজগুলো। সরকারি এসব কলেজ হলো—ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।

এসব কলেজ একীভূত করে সরকার নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে যাচ্ছে। প্রস্তাবিত এই কাঠামো নিয়ে ওই সব কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন। কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা কলেজ বজায় রাখার দাবিতে আন্দোলন করছেন। ইডেন কলেজের ছাত্রীদের অনেকেই প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না। এ জন্য তারা খসড়া অধ্যাদেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আন্দোলনের মধ্যে মতামত গ্রহণের জন্য গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করতে অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে। ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মতামত গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’। সাতটি কলেজ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠকেন্দ্র (একাডেমিক ক্যাম্পাস)। একেক ক্যাম্পাসে আলাদা আলাদা বিষয়ে (ডিসিপ্লিন) পড়ানো হবে। বিষয়ও কমে যাবে। এই খসড়া প্রকাশের পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের অনেক শিক্ষার্থীও এখন প্রস্তাবিত কাঠামোর বিপক্ষে।  তবে যারা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় চাইছেন, তারা দ্রুত অধ্যাদেশ চান। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।

অবশ্য অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সবার মতামতের প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অংশীজনের গঠনমূলক ও প্রতিনিধিত্বশীল মতামতের ভিত্তিতে এবং বিধিসম্মত প্রক্রিয়ায় খসড়া পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ শেষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সর্বোপরি শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করার উপযোগী ও বাস্তবসম্মত অধ্যাদেশ প্রণয়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Link copied!