দেশে গত ১০ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৯৫ জন নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৩ জন নারীকে। আর ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন চারজন। এছাড়াও ১০৮ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) অগ্নি প্রকল্পের পক্ষ থেকে গত ১০ মাসের এসব ঘটনার তথ্য তুলে ধরা হয়।
আসক রাজশাহীর উদ্যোগে সকালে শহরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অগ্নি প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক হাসিবুল হাসান পল্লব।
গত বছরের শেষ ১০ মাসে দেশে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৪২৩ জন নারী। এর মধ্যে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন ১৭৩ জন। যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হয়েছেন ১২৫ জন নারী।
ওই সময়ে ২৫ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ১০ জন। সালিসে ফতোয়ার মাধ্যমে নির্যাতন করা হয়েছে চারজন নারীকে। শিশু নির্যাতনের চিত্রও উদ্বেগজনক। ওই ১০ মাসে ৮৮৫ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ৩৯৯ জন।
এই সভায় ১০ মাসের রাজশাহী জেলার চিত্রও তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, রাজশাহীতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৫ জন নারী। এছাড়া ১৮ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। চারজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দুজন নারীকে। এছাড়া ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন একজন নারী।
এই ১০ মাসে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৬ জন নারী। স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন ছয়জন। এছাড়া যৌতুকের জন্য নির্যাতিত হয়েছেন ৬০ জন। এ জেলায় অ্যাসিড নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ১১ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সালিসে ফতোয়ার নামে নির্যাতন করা হয়েছে দুজন নারীকে। জেলায় ১০ মাসে ৪২ জন শিশুকে নির্যাতন করা হয়েছে। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে আট শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে অগ্নি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীনে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে অগ্নি প্রকল্পের আওতায় ১০ মাসে ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মতবিনিময় সভায় জানানো হয়।