উস্কানি দিয়ে ফায়দা লুটতে চায় মিয়ানমার: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২, ০১:২৮ এএম

উস্কানি দিয়ে ফায়দা লুটতে চায় মিয়ানমার: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লাখো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে না নিয়ে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করে মিয়ানমার ফায়দা লুটতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খোরশেদ আলম। আসিয়ানভূক্ত ওই দেশটির এই উসকানিতে বাংলাদেশ পা দেবে না বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আশিয়ান বহির্ভূত দেশ ও মিশনের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মিয়ানমার থেকে বারবার ছোড়া ভারী কামানের গোলা ও মর্টার শেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়ার ঘটনা, এতে হতাহত ও বাংলাদেশের পদক্ষেপ নিয়ে ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের অবহিত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বৈঠকের আয়োজন করে।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “মিয়ানমারের আচরণ সম্পর্কে কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে। তাদের কিছু করণীয় থাকলে সেটা করতে বলা হয়েছে।” মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে; কোনোভাবেই স্থিতিশীলতা নষ্ট হোক এটা ঢাকা চায় না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে ওই দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের আশ্রয়ে রয়েছে বলে মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এবিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. খোরশেদ আলম বলেন, “এই অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। অন্য কোনো দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে বাংলাদেশ কখনও তাদের ভূখণ্ড কোনো গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেয় না।”

মিয়ানমার ইস্যুতে ঢাকায় দায়িত্বরত বিদেশি মিশন, দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের ব্রিফের জন্য আমন্ত্রণ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে প্রায় সব অতিথি উপস্থিত থাকলেও চীনের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

এর আগে, গতকাল  সোমবার মিয়ানমার থেকে একাধিকবার নিক্ষেপ করা ভারী কামানের গোলা ও মর্টার শেল দেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ার ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সমর্থন চায় বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারবার ডেকে সতর্ক করার পরও মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসছে। এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো’কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে প্রতিবাদ জানানোসহ সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও সীমান্তে গোলাগুলির পরিমাণ বাড়ছে।

বিষয়টি নিয়ে সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত আসিয়ান দেশগুলোর দূতদের ডেকে তাদেরকে সীমান্ত পরিস্থিতির অবস্থা পরিষ্কার করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেক্ষেত্রে আসিয়ানের সমর্থন চায় সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আসিয়ানভূক্ত দেশগুলোর দূতদের  রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ডেকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। ওই বৈঠকে মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ সীমান্তে যে সব কর্মকাণ্ড হচ্ছে তার বর্ণনা দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম।

বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত আসিয়ান দেশগুলোর দূতরাও এগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসা করে সহযোগিতার কথা ব্যক্ত করেন।

Link copied!