মে ২, ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম
বৈশাখের রুদ্ররূপ শেষ হয়ে এলো স্বস্তির বৃষ্টি। তবে সব জায়গায় নয়, শুধু চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দারা বৃষ্টিসুধা পান করেছেন। তবে এই বৃষ্টির ফলে ভয়ংকর নেহাত কম নয়। একদিনের বজ্রপাতেই ১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কুমিল্লা, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও কুমিল্লায় বজ্রপাতে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় ৪ জন, রাঙামাটিতে ৩ জন, কক্সবাজারে ২ জন, খাগড়াছড়িতে একজন প্রাণ হারিয়েছেন।
রাঙামাটি: পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুই উপজেলায় বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে রাঙামাটি শহরের সিলেটিপাড়া ও বাঘাইছড়ির রুপাকারী ইউনিয়নের মুসলিম ব্লকে এবং দুপুরে একই উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের লুইনথিয়ান পাড়ায় এসব বজ্রপাতে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহতদের পরিচয়- সদরের সিলেটিপাড়া এলাকার বাসিন্দা নজির হোসেন (৫০), বাঘাইছড়ির রুপাকারী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মুসলিম ব্লক গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী বাহারজান বেগম (৫৫) ও সাজেক ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের লুইনথিয়ান পাড়ায় বেটলিং মৌজার কারবারি মিথুন ত্রিপুরার বোন তনিবালা ত্রিপুরা (২৫)।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে দুই লবণচাষির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কোদাইল্যাদিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া এলাকার জমিরের ছেলে দিদারুল ইসলাম (৩৫) ও রাজাখালী ইউনিয়নের ছড়িপাড়া এলাকার জামালের ছেলে মো. আরমান (২৫)।
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ঝোড়ো বাতাসে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ইয়াছিন আরাফাত (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
ইয়াছিন আরাফাত বড়নাল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম পাড়ার বাসিন্দা ইউসুফ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
সূত্র জানায়, সকালে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের মধ্যে বাড়ির উঠানের পাশে কাঁচা আম কুড়াতে যায় দুই ভাই। এ সময় সেখানে বজ্রপাত হয়। এতে ছোট ভাই প্রাণে বেঁচে গেলেও ঘটনাস্থলেই বড় ভাই ইয়াছিন আরাফাতের মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা: কুমিল্লার ৪ উপজেলায় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার চান্দিনা, বুড়িচং, সদর দক্ষিণ ও দেবিদ্বারে মোট চারজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুজন কৃষক রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও নিহত চারজনের স্বজনদের মাধ্যমে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানা গেছে।
নিহতরা হলেন- চান্দিনার বরকইট ইউনিয়নের কিছমত-শ্রীমন্তপুর এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে কৃষক দৌলতুর রহমান (৪৭), বুড়িচংয়ের রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচোড়া এলাকার কুদ্দুস মিয়ার ছেলে কৃষক আলম হোসেন, দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী এলাকার বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান ও সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম।
বুড়িচংয়ে নিহত আলম হোসেনও কৃষি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পাঁচোড়া এলাকায় থাকতেন তিনি। এদিকে দেবিদ্বার ও সদর দক্ষিণে নিহত দুজনের বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।