চট্টগ্রামে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীসহ নিহত ৪২

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুন ৫, ২০২২, ০৮:০৮ পিএম

চট্টগ্রামে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীসহ নিহত ৪২

সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীসহ ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ফায়ার সার্ভিসের মোট ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। হাইড্রোজেন পারক্সাইড থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রি.জে. মো. মাইন উদ্দিন । আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে ঘটনাস্থলে কাজ করছে সেনাবাহিনীর আড়াইশ সদস্য। গুরুতর আহতদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টরে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশন ডিরেক্টরেট-আইএসপিআর।  

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে প্রথমে একটি কনটেইনারে আগুনের সুত্রপাত হয়। পরে আরও কয়েকটি কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। প্রথমে কেমিক্যাল কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। এরপর আগুন ছড়াতে থাকে। শেষ পর্যন্ত দুই শতাধিক কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দগ্ধ দুই শতাধিক ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ও অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ৫২ জন এবং অর্থোপেডিক বিভাগে ১০ ভর্তি রয়েছে। চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ৫২ জন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

চমেক বার্ন ইউনিট

তাদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পোড়া। তাদের বাঁচাতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। বেলা ২টা পর্যন্ত বিএম ডিপো থেকে ৪০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এখন যে মরদেহগুলো উদ্ধার হচ্ছে সেগুলো আগুনে পুড়ে বীভৎস রুপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। 

মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চকবাজার জোনের সহকারী (এসি) কমিশনার শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, পাঁচলাইশ থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) মর্গে পাঠাচ্ছে। সেখানে মরদেহ শনাক্তের জন্য ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। যাদের স্বজন নিখোঁজ রয়েছেন তাদের ডিএনএ পরীক্ষা করে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, পুলিশের সদস্যও রয়েছেন। ঘটনার পরপরই হতাহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত বলেন, আহতদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর। নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ডিপোর আইসিটি কাউন্টারে কতর্ব্যরত মবিনুল হক, মহিউদ্দিন (২৪) ও হাবিবুর রহমান (২৩)। এদের মধ্যে মবিনুল ও মহিউদ্দিন বাড়ি বাঁশখালী উপজেলায়। হাবিবুরের বাড়ি ভোলায়।

কনস্টেবল তুহিন

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, বিস্ফোরণে তাঁদের থানার কনস্টেবল তুহিনের এক পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আরও অন্তত পাঁচ কনস্টেবল, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন এবং শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন।

অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ কোটি টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুক্ন খাবার বরাদ্দ করেছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

 

Link copied!