পিরোজপুরের মাল্টিপারপাস কোম্পানি এহসান গ্রুপের এমডি মুফতি মাওলানা রাগীব আহসান ও তার ৩ ভাইকে ১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহিউদ্দীনের আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সরকারি কৌঁসুলি খান মো. আলাউদ্দিন জানান, তাদেরকে ৯১ কোটি ১৫ লাখ ৯৩৩ টাকার আত্মসাৎ মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। তেজদাসকাঠী এলাকার হারুন অর রশিদের মামলার প্রেক্ষিতে তাদের এই রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
উল্লেখ্য, ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বাসা থেকে এহসান গ্রুপের এমডি মুফতি মাওলানা রাগীব আহসান ও তার ভাই আবুল বাশারকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ ও র্যাব। অপর দুই ভাই মুফতী মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মো. খাইরুল ইসলামকে পিরোজপুরের খলিশাখালী নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
জানা যায়, গ্রাহকের টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় না করে রাগীব আহসান এবং তার আত্মীয়স্বজনের নামে জমি ক্রয় করেন। সেসব জমির ৯০ শতাংশ গোপনে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। এহসান গ্রুপের ১৭ প্রতিষ্ঠানের ১৬টিই উধাও হয়ে গেছে।
সুদবিহীন ‘শরিয়তসম্মত’ ব্যবসার নামে বিপুল গ্রাহকের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে।
এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেডসহ কয়েকটি মাদ্রাসা খুলে ওই কোম্পানি ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়েছে এর আগে।
রাগীব আহসান নূরে মদিনা ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। একসময় তিনি মসজিদের ইমাম ছিলেন। বাড়ি পিরোজপুর সদরের খলিশাখালী এলাকায়।
এহসান একটা সময় এমএলএম ব্যবসা শুরু করেন এবং ২০১০ সালে এহসান রিয়েল অ্যাস্টেট নামে একটি কোম্পানি খোলেন। পরে আরও ডজনখানেক কোম্পানি খুলে তিনি নাম দেন ‘এহসান গ্রুপ পিরোজপুর-বাংলাদেশ’ ।
চলতি বছরের শুরুতে গণমাধ্যমে খবর আসে— মাসে মাসে ভালো মুনাফার লোভ দেখিয়ে পিরোজপুর ও আশপাশের জেলার কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের পর ওই গ্রুপের কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়ে গেছেন। এর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে শুরু করে। পরিপ্রেক্ষিতের তাকে গ্রেফতার করা হয়।