মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকাতেই ১৭ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ১৯, ২০২১, ০৪:৫৭ এএম

মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকাতেই ১৭ মামলা

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুলের হকের বিরুদ্ধে কেবল রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন থানাতেই ১৭টি মামলা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাতে, গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি ও ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগের অভিযোগ এনে স্থানীয় এক নাগরিক মোহাম্মদপুর থানায় মামুনুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করবে বলে গ্রেপ্তারের পর জানানো হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর থেকে তাকে আটকের পর আগামীকাল সোমবার (১৯ এপ্রিল) তাকে আদালতে সোপর্দ করবে পুলিশ।

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১৭ মামলা

ডিএমপি সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ডিবির মতিঝিল বিভাগে তদন্তাধীন আটটি মামলা, লালবাগ বিভাগে তদন্তাধীন দুটি মামলা এবং তেজগাঁও বিভাগে তদন্তাধীন একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুনুল হক।

এছাড়া মতিঝিল থানায় তদন্তাধীন একটি এবং পল্টন থানায় তদন্তাধীন চারটি মামলায় তার নাম রয়েছে। ১৬টি মামলার মধ্যে ১৫টিই হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের তাণ্ডবের পর। ওই ১৫ মামলার বাদী পুলিশ। ১৬ মামলার অন্যটি সম্প্রতি পল্টন থানায় দায়ের করেন যুবলীগের এক নেতা।

জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম এলাকায় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে হোফজতের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর মামুনুলের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। আরেকটি হলো মোহাম্মদপুর থানার মামলা।

ররিবার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ মামুনুলকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

সেখানে উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে নজরদারিতে রাখার পর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।’

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘মামুনুলের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানা ও রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতারপ্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দুপুর ২টার দিকে তেজগাঁও থানায় নেওয়া হয়। সবশেষ তথ্যমতে তিনি সেখানেই আছেন। রাতে জানতে চাইলে ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘তিন বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি প্রাথমিকভাবে তা স্বীকার করেছেন। তবে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।’

ডিসি হারুন বলেন, ‘জিজ্ঞেসবাদে আরও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে আরও নাশকতাসহ অন্যান্য মামলা রয়েছে। সেগুলোতেও তাকে আগামীকাল গ্রেফতার দেখানো হতে পারে। আদালতে সোপর্দের আগ পর্যন্ত তাকে তেজগাঁও থানা হেফাজতেই রাখা হবে। আগামীকাল (সোমবার) মোহাম্মদপুর থানার নাশকতা ও ভাঙচুর মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।’

অন্যদিকে মোহাম্মদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবদুল আলিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০২০ সালের ৭ মার্চ মোহাম্মদপুর থানায় হওয়া মামলায় মামুনুল হক সাত নম্বর আসামি। স্থানীয় এক নাগরিক তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।’ তবে তিনি বাদীর নাম বলতে পারেননি।

তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের চাঁন মিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা জি এম আলমগীর শাহীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন। মামলায় অভিযোগ ছিল, বেআইনি জনতাবদ্ধে এলোপাতাড়ি মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি দেওয়া, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগ সৃষ্টি ও প্ররোচনা। একই মামলায় মোবাইল, সাত হাজার টাকা, ২০০ ডলার এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ডেবিট কার্ড চুরির অভিযোগও রয়েছে।

Link copied!