মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব, গোলাবর্ষণের তীব্র প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২, ০৩:৪৯ এএম

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ফের তলব, গোলাবর্ষণের তীব্র প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ

এক সপ্তাহ পার না হতেই মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে বাংলাদেশের সীমানার ভেতর আবারও গোলাবর্ষণের ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে ফের তলব করে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সরকার।

রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।

এর আগেও  মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনায় গত সোমবার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায় ঢাকা।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা আজকেও তাদের (মিয়ানমার) রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিলাম। আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা, আমরা তাদেরকে সব প্রতিবাদ জানিয়েছি।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “ওরা বলেছে যে, এটা মোটেই উস্কানিমূলক না। এটা স্ট্রে (আকস্মিক চলে এসেছে)।”

প্রসঙ্গ, গত ২৮ অগাস্ট দুপুরের দিকে বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে। গতকাল শনিবারও মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে। মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে এসব গোলা ‘ভুল করে’ বাংলাদেশে চলে এসেছে।  

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত হচ্ছে আর সেই সংঘাতের ফলে আমাদের এখানেও বোমা পড়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “ওরা বলেছে এগুলো স্ট্রে, এর পেছনে কোনো মোটিভ নাই। আমাদের তারা কোনো উস্কানি দিচ্ছে না। তারা (মিয়ানমার) বলেছে বাই মিসটেক (ভুল করে) এখানে এসে পড়ে গেছে।”

রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে।

গত বুধবার রাখাইন রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহরতলীতে আরাকান আর্মির সদস্যরা একটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়ে ১৯ জনকে হত্যা করে বলে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়। আরাকান আর্মির দখলে নেওয়া পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিতে সেনাবাহিনী এগোচ্ছে বলেও মিয়ানমারের মিডিয়াগুলোর খবরে বলা হয়।

মিয়ানমারের এই অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে দেশটির নাগরিকরা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক পাহারায় রাখা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “আমরা মোটামুটিভাবে আমাদের নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছি। ওইটা আপনারা জানেন যে, বেশ সংঘাত হচ্ছে, তার ফলে আমাদের ভয় হলো এই পারসিকিউটেড লোক যদি আবার আমাদের দেশে ঢোকার চেষ্টা করে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “এজন্য আমরা আমাদের যত বর্ডার গার্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটি অ্যাপারেটাস আছে, সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। আমরা প্রস্তুত, কেউ যাতে এখানে না আসতে পারে।”

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সাংবদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “আমি সবসময় আশাবাদী। এই ঘটনার ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যে প্রোগ্রাম আমরা হাতে নিয়েছি, সেটা বাধাগ্রস্ত হবে না।”

Link copied!