সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩, ১২:৩৫ এএম

সাহাবুদ্দিন চুপ্পুই দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন

ব্যাপক আলোচনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপপুই একমাত্র প্রার্থী যার নাম নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা পড়েছে। রবিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে আর কোনো প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি।

রাষ্ট্রপতি পদে একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় ভোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। তাই সাহাবুদ্দিন চুপপুই হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি।

রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের জন্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নামে দুটি মনোনয়ন জমা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন দুটি আগামীকাল সোমবার যাচাই বাছাই করা হবে।

তিনি জানান, দুটি মনোনয়ন পত্রের একটির প্রস্তাবক নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং অন্যটি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

ইসি সচিবালয়ের সচিব আরও বলেন, “রবিবার সকাল ১১টায় একটি ও ১১টা ৫ মিনিটে অপর একটি মনোনয়ন জমা পড়ে। সোমবার দুটি মনোনয়নপত্র বাছাই হবে। আর প্রত্যাহার শেষে রাষ্ট্রপতির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।” আইন অনুযায়ী একই ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ তিনটি মনোনয়ন পত্র জমা দেয়া যেতে পারে বলেও তিনি জানান।

জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন, এটি নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া যায়। বিরোধীদল জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে।

এর আগে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া সাহাবুদ্দিন চুপপুকে ফুল দিয়ে বরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এসময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর বোন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে যেসব রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন করেছেন—

প্রথম রাষ্ট্রপতি: শেখ মুজিবুর রহমান: ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২। মোট ২৭০ দিন।

দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম: ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২। মোট ২৭০ দিন। (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)

তৃতীয় রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী: ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩। মোট ৩৪৬ দিন।

৪র্থ রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহ: ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩ থেকে ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪। মোট ১ বছর ৩৪ দিন। (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)

৫ম রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহ: ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫। মোট ৩৬৩ দিন।

৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান: ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ থেকে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫। মোট ২০২ দিন।

৭তম রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ: ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫। মোট ৮৩ দিন।

৮ম রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম: ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ থেকে ২১ এপ্রিল ১৯৭৭। মোট এক বছর ১৬৬ দিন।

৯ম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ থেকে ৩০ মে ১৯৮১। মোট চার বছর ৩৯ দিন।

১০তম রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার: ৩০ মে ১৯৮১ থেকে ২০ নভেম্বর ১৯৮১ (ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি)

১১তম রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার: ২০ নভেম্বর ১৯৮১ থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২। মোট ২৯৮ দিন।

পদ খালি (২৪ – ২৭ মার্চ ১৯৮২)

১২তম রাষ্ট্রপতি আ ফ ম আহসানউদ্দিন চৌধুরী: ২৭ মার্চ ১৯৮২ থেকে ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৩ মোট ১ বছর ২৫৮ দিন।

১৩তম রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ: ১১ ডিসেম্বর ১৯৮৩ থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০। মোট ৬ বছর ৩৬০ দিন।

১৪তম রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ: ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ থেকে ১০ অক্টোবর ১৯৯১। মোট ৩০৮ দিন।

১৫তম রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস: ১০ অক্টোবর ১৯৯১ থেকে ৯ অক্টোবর ১৯৯৬। মোট চার বছর, ৩৬৫ দিন।

১৬তম রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ: ৯ অক্টোবর ১৯৯৬ থেকে ১৪ নভেম্বর ২০০১। মোট পাঁচ বছর ৩৬ দিন।

১৭তম রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী: ১৪ নভেম্বর ২০০১ থেকে ২১ জুন ২০০২। মোট ২১৯ দিন।

১৮তম রাষ্ট্রপতি জমিরউদ্দিন সরকার: ২১ জুন ২০০২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর ২০০২। মোট ৭৭ দিন।

১৯তম রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ: ৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। মোট ছয় বছর ১৫৯ দিন।

২০তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ২০ মার্চ ২০১৩। মোট ৪ বছর ৩৬ দিন।

২১তম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ: ১৪ মার্চ ২০১৩ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত।

২২তম রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন মো. সাহাবুদ্দিন।

Link copied!