সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় প্রীতির মা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৫, ২০২২, ০৮:২৪ পিএম

সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় প্রীতির মা

রাজধানীতে অস্ত্রধারীদের হামলায় বৃহস্পতিবার রাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া দুজনের একজন রিকশাযাত্রী সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি (২২)। ঘটনার সময় রিকশায় করে তার বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় যাওয়ার পথে প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। 

প্রীতির মা হোসনে আরা বেগম সন্তানকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়। কদিন আগেই তিনি হারিয়েছিলেন নিজের মা'কে। তাকে এখন কোনোভাবেই বোঝানো যাচ্ছে না বলে জানান প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন। ওইদিনের ঘটনায় নিহতদের একজন হলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪)। যিনি নিজ গাড়িতে বসা ছিলেন সেদিন।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার ভোররাতের দিকে সুমাইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রীতি তার মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পশ্চিম শান্তিবাগে ভাড়া বাসায় থাকে। তবে গত ৪ দিন সে খিলগাঁও তিলপা পাড়ায় আমার বাসায় ছিল। সেখান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছিল। তবে, নিজের বাসার কাছে এসেও ফিরে আসতে হয় প্রীতিকে। বাসার কাছাকাছি গেলে প্রীতিকে তার মা হঠাৎ ফোন দিয়ে বলেছিলেন- চট্টগ্রাম থেকে প্রীতির মামা-মামী এসেছেন। সে যেন আজকেও আমার বাসায় থাকে। আগামীকাল যেন বাসায় যায়।’

পরিবার প্রীতির মৃত্যুর খবর পান রাত ১২ টার দিকে। তারা রাতেই ছুটে আসেন ঢাকা মেডিক্যালে। সকালে ঢামেক মর্গের সামনে প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, মেয়ের হত্যার বিচার চাই না। মামলা চালানোর মতো অবস্থাও নেই। আমরা নিরীহ মানুষ। বিচার চাইলে আল্লাহর কাছে চাই।

প্রীতিদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। সেখানে যাতায়াত কম। বাবার চাকরিসূত্রে ঢাকায় থাকে তার পরিবার। জামাল উদ্দিন বলেন, মিরপুর-২ এ একটি কম্পানির ফ্যাক্টরির প্রডাকশনে চাকরি করি। বেতন বেশি পাই না। অনেক কষ্টে মেয়ে প্রীতি ও ছেলে সোহায়েব জামাল সামি ও স্ত্রীকে নিয়ে পশ্চিম শান্তিবাগের একটি বাসায় ভাড়ায় থাকি।

মেয়ে হত্যার বিচার চান কি-না ও মামলা করবেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা করবো না। মামলা পরিচালনা করার মতো অবস্থা আমার নাই৷ কোনো বিবাদে জড়াতে চাই না। কেউ যদি সহযোগিতা করে, সেটা ভিন্ন কথা।

Link copied!