ট্রেনে চড়ে রাজশাহী-ঢাকা ‘ভ্রমণ করলেন পুতিন’!

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১৫, ২০২২, ১০:৫২ পিএম

ট্রেনে চড়ে রাজশাহী-ঢাকা ‘ভ্রমণ করলেন পুতিন’!

বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজশাহী-ঢাকা রুটের একটি টিকিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। টিকিটটি ভাইরাল হওয়ারই কথা। কারণ এই  টিকিটে গত ৫ মে ধূমকেতু এক্সপ্রেসে চড়ে রাজশাহী থেকে ঢাকা ভ্রমণ করে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বর্তমানে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। এমতাবস্থায় যুদ্ধ নিয়ে ভিশন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার মধ্যেও বাংলাদেশে এসে রাজশাহী থেকে ট্রেনে চড়ে ঢাকায় গিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট!

বিষয়টি সত্যি না হলেও টিকিট তাই বলছে। ভাইরাল সেই টিকিট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে রসিকতা। তবে বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখছেন রেলওয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।

তিনি সামািজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বলেছেন, “সরকারি সিস্টেম নিয়ে রসিকতা করার কোনো অবকাশ নেই। নিজের নাম গোপন রেখে যে কেউ অন্য নামে টিকিট কাটতে পারছে বাংলাদেশে, যা অন্য কোনো দেশে করা কঠিন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এমনটি অকল্পণীয়। এতে ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে রবিবার স্ট্যাটাস দিয়েছেন রেলের এ সাবেক কর্মকর্তা।

রেলওয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলনের সেই স্ট্যাটাস দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো-

‘ভ্লাদিমি পুতিন সাহেব কবে আমাদের দেশে এসে রেল ভ্রমণ করে গেলেন তা আমরা কেউ জানলাম না, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। এভাবে চলতে থাকলে বাইডেন সাহেব এসে রেলে উঠলে সেটিও হয়তো কেউ জানতে পারবে না। প্রয়াত জর্জ ওয়াশিংটন বা উইন্সটন চার্চিল টিকিট কাটলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ফান করলাম। কিন্তু সরকারি সিস্টেমে ফান করার কোনো অবকাশ নেই।

জগতের কোথাও পাসপোর্ট কিংবা অথরিটি কর্তৃক ভেরিফায়েড নাম ছাড়া অন্য নামে রেল টিকিট করতে পারবে না। কারণ টিকিট করার সময় সিস্টেম তা যথাযথভাবে যাচাই করেই তবে টিকিট ইস্যু করবে।

ভারতে রেল টিকিট করার আগে বিশাল এক ফর্ম পূরণ করতে হয় বলে জানি। জগতজুড়ে কেন এত কঠিন সিস্টেম?

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে যাত্রীর পরিচয় বের করা যায়। কোনো ধরনের নাশকতায় যাতে জড়িত যাত্রীকে শনাক্ত করা যায়। এ ছাড়া আরও অনেক কারণ আছে।

আমাদের রেল অনলাইন ডাটা বেজ করছে কোনো রকম ভেরিফিকেশন ছাড়াই। যাত্রীকে তার নাম ও এনআইডি নাম্বার দিয়ে রেল সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কিন্তু তা এনআইডি সার্ভার ভেরিফিকেশন ছাড়াই।

এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে রেল হুক-আপ করেনি। ফলে যাত্রী রেলে রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে কোনো নাম এবং ১৩ বা ১৭ ডিজিটের যে কোনো সংখ্যা বসিয়ে রেজি. করে টিকিট করতে পারে। যেমন ‘১১১১১১.... বা ২২২৩৩৩৩৩.....’। জর্জ বাইডেন বা ভ্লাদিমি চার্চিল, যে নামই দিন, রেজিস্ট্রেশন হয়ে রেল টিকিট কাটতে পারবেন।

এতে ভয়াবহ ব্যাপার দুটি। এক. যে কোনো নাম ও এনআইডি সংখ্যা বসিয়ে বিপদ ঘটানো। দুই. আপনার অরিজিনাল নাম ও এনআইডি নাম্বার যদি কেউ জানে, সে সেটা ব্যবহার করে টিকিট কেটে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।

এনআইডি সার্ভার হুক-আপ না করে আন্দাজে এনআইডি নাম্বার ও নাম দিয়ে কোনো ডাটাবেজ তৈরি করে সেটি ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার সিস্টেম চালু করার কোনো অবকাশ কোনো সরকারি দপ্তরের হতেই পারে না।

রেলে সাড়ে তিন মাস থাকাকালীন প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছিলাম নির্বাচন কমিশন সার্ভারের সঙ্গে রেলের হুক-আপ করানোর জন্য। সিএনএসবিডি আমার অনুরোধে সফটওয়্যারসহ সব কিছু রেডি করে ফেলেছিল। আফসোস! রেলের কোনো সাড়া পাইনি।’

Link copied!