কথায় বলে শখের তোলা আশি টাকা। মানুষ শখ পূরণ করতে অনেক কিছু করতে পারেন। শখ এমন একটি জিনিস যা যে কোনো বয়সী মানুষকে ছেলেমানুষি করতে বাধ্য করে। মানুষ এক ধরণের নেশার মধ্যে থেকে শখের নেশা পূরণ করতে থাকেন। একেকজন মানুষের মানসিকতা, চিন্তাধারা ও সত্ত্বা যেমন আলাদা। তেমনই তাদের শখের ধরনও আলাদা ধরণের হয়। বিভিন্ন সময়ে মানুষ শখের বশে জুতা, মাছ, জাহাজ, গাড়িসহ নানান আকৃতির গাড়ি, বাড়ি বানিয়ে রেকর্ড গড়েছেন অনেকে।
এবার বিশাল এক মোরগের আকৃতির বিল্ডিং বানিয়ে গিনেস রেকর্ডে জায়গা করে নিয়েছে ফিলিপাইনের এক রিসোর্ট মালিক। বিল্ডিংটি ফিলিপাইনের নিগ্রোস অক্সিডেন্টাল প্রদেশের ক্যাম্পুয়েস্টোহান হাইল্যান্ডে অবস্থিত। ১১৪ ফুট ৭ ইঞ্চি (৩৪.৯৩১ মিটার) লম্বা, উচ্চতায় ১২.১২৭ মিটার (৩৯ ফুট ৯ ইঞ্চি) প্রস্থ ২৮.১৭২ মিটার (৯২ ফুট ৫ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্য ক্যাম্পুয়েস্টোহান হাইল্যান্ড রিসোর্টের রুস্টার হোটেলটি বেশ দৃষ্টিনন্দন।
এটি কেবল গৃহপালিত পাখির মতোই নয়, বাস্তবে একটি দৈত্যাকৃতির সত্যিকার মোরগের মতো দেখায়। রিসোর্টের পরিচালক রিকার্ডো ক্যানো গোয়াপো টান বলেন যে, তিনি এমন কিছু নজরকাড়া তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা স্থানীয় সংস্কৃতিকেও শ্রদ্ধা জানায়, যার মধ্যে গেমফাউল একটি বিশাল অংশ।
অনন্য আকৃতির বিল্ডিংটির ডিজাইন বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে যখন বিল্ডিংটিকে ঝড় এবং টাইফুন সহ্য করতে হয়, যা এই অঞ্চলে সাধারণ। তা সত্ত্বেও মাত্র ৪৫৬ দিনে নির্মাণকাজ শেষ হয়।
২০১০ সালে ক্যাম্পুয়েস্টোহান হাইল্যান্ড রিসোর্টের জন্য এই জমিটি রিকার্ডোর স্ত্রী নীতা কিনেছিলেন। রিকার্ডো বলেন, এখানে এসে তারা পাহাড়ের মন্ত্রমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। পর্যান্ত রাস্তা ও বিদ্যুতের অভাব সত্ত্বেও তিনি সেখানে একটি রিসোর্ট নির্মাণ শুরু করেন।
তিনি রিসোর্টের বিল্ডিংটি একটি বিশাল আকারের মোরগের আকৃতির করবেন বলে সিন্ধান্ত নেন। এর পেছনে অবশ্য একটি কারণ আছে বটে। নিগ্রোস অক্সিডেন্টালের একটি গেমফাউল শিল্প রয়েছে, যা ফিলিপাইনে লাখ লাখ লোককে নিয়োগ করে। তারা মনে করেন, মোরগ প্রবল বাতাসের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে এবং অন্যান্য মোরগের চাপ সহ্য করতে পারে, জীবনের যে কোনো ধরনের অসুবিধা ও কষ্ট থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করার ক্ষমতা আছে মোরগের। এমনটাই মনে করেন নেগ্রেন্স লোকেরা।
রিসোর্টটি একটি বিশাল ওয়েভ পুল, একটি বড় রেস্তোরাঁ, একটি ক্যাফে, তিনটি সুইমিং পুল, হোটেল রুম, বনিতা কুঁড়েঘর, শত শত ডাইনোসর এবং কার্টুন/মার্ভেল চিত্র রয়েছে। অবশ্যই একটি মুরগির আকারে বৃহত্তম ভবন নিয়ে ভাবছে তারা। ভবনটি গিনেস রেকর্ডে জায়গা করে নেওয়ায় রিকার্ডোর পরিবারসহ এই অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ সবাই গর্বিত।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড