আজ ভূতেদের দিন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৩১, ২০২৪, ১১:০৫ এএম

আজ ভূতেদের দিন

প্রতীকী ছবি

৩১ অক্টোবর হ্যালোইন ডে বা অল সোলস ডে বা ভূতেদের দিন। এই দিনে  বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঐতিহ্যবাহী হ্যালোইন উৎসব পালিত হয়। তবে পশ্চিমা বিশ্বে জাঁকজমকতার সঙ্গে পালন করা হয় হ্যালোইন। অনেকেরই হয়তো ধারণা নেই আসলে কী এই হ্যালোইন!

প্রায় দুই হাজার বছর আগে আয়ারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও উত্তর ফ্রান্সের কেল্টিক জাতিরা বাস করতো। তারা বিশ্বাস করতো অক্টোবরের শেষ দিনটি বিশ্ব ও আত্মিক জগতের মধ্যে ব্যবধান কমে আসতো। তাদের বিশ্বাস আত্মারা খুব সহজে এই সময়ে পৃথিবীতে ফিরে আসতো। ওইদিন উড়ন্ত ঝুড়িতে করে হ্যালোইন ডাইনি সারাআকাশ জুড়ে উড়ে বেড়ায়।

এই ব্শ্বিাস থেকে দিনটি তারা ‘সাহ-উইন’ হিসেবে পালন করতো। যখন রোমানরা ইউরোপের বেশিরভাগ অংশ জয় করে নিল, তখন খ্রিষ্টধর্ম কেল্টিক ভূমিতে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে কেল্টিকদের এই বিশ্বাস এবং সংস্কৃতির ঐতিহ্যগুলো রোমানদের মাধ্যমে সারা ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।  খ্রিষ্টানদের ‘অল সেন্টস’ বা ‘অল সোলস ডে’ উৎসব ‘অল-হ্যালোস’ নামে পরিচিতি লাভ করে। অল-হ্যালোস’র আগের রাত যাকে ‘অল হ্যালোস ইভ’ বলা হতো, সেটি হ্যালোইন নাম ধারণ করে।

উনিশ শতকের শেষ ভাগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমশই জনপ্রিয় হতে থাকে হ্যালোউইন। ১৮০০ দশকের শেষের দিকে আমেরিকায় ‘হ্যালোইন’ পালনে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে মানুষ মৃতদের আত্মার প্রতীকী পোশাক পরে, ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার বা ‘সোল কেক’ সংগ্রহ করতো (একটি খ্রিষ্টান রীতি, যা ‘সোলিং’ নামে পরিচিত)। এ সময় তারা খাবারের বিনিময়ে প্রার্থনা বা গানের প্রস্তাব দিত। যদিও খ্রিষ্টানরা ঐতিহ্যগতভাবে তাদের প্রিয়জনের জন্য প্রার্থনা করতো। ভিক্টোরিয়ান যুগের কাছাকাছি একধরনের পেস্ট্রি দেওয়া হতো, যাকে বলা হয় ‘সোল কেক’। এটি বিস্কুট বা কেক’র মতো কিছু। তবে আধুনিক সময়ে এসে যুক্ত হয়েছে মিষ্টি, চকোলেট ও নানান ধরনের খাবার।

আরও পড়ুনঃ আজ সঞ্চয় করার দিন

ইউরোপীয় ঐতিহ্য থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে হ্যালোইন আসে। ‘ট্রিক-অর-ট্রিটিং’ রীতির পেছনেও গল্প আছে। ইউরোপের মধ্যযুগীয় কিছু প্রথা ছিল। এর একটি প্রথা ছিল ‘সাউলিং’। মধ্যযুগে ইংল্যান্ডে দরিদ্র মানুষরা ‘অল সোলস ডে’ উপলক্ষে খাবারের বিনিময়ে প্রার্থনা করতো। এবং তাদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করার জন্য বিভিন্ন বাড়িতে যেত। তারা ‘সোল কেক’ নামে পরিচিত এক ধরনের কেক পেত। ১৮০০-এর দশকের ইউরোপে শিশুরা বিভিন্ন ভৌতিক কস্টিউম পরে প্রতিবেশীদের বাড়ি যেত এবং ছোটখাটো অভিনয় বা গান পরিবেশন করত, বিনিময়ে মিষ্টি বা খাবার পেত। পরবর্তীতে ১৮০০ দশকের শেষ দিকে  যুক্তরাষ্ট্রে  হ্যালোইনের সময়ে মানুষ বিভিন্ন কস্টিউম পরিধান করে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে গিয়ে খাবার বা অর্থ চাইতে শুরু করে। এ প্রথাটি ধীরে ধীরে বর্তমানের ট্রিক-অর-ট্রিট সংস্কৃতিতে রূপান্তরিত হয়।

Link copied!