বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় আজও প্রথম স্থানে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকার নাম। সম্প্রতি এ তালিকায় প্রায় প্রতিদিনই প্রথম স্থানে থাকছে ঢাকা।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় বাতাসের মান ছিল ২৬৩ স্কোর। বায়ুর মান বিচারে এ মাত্রাকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়।
এ ছাড়া একই সময়ে একিউআই স্কোর ২৩৫ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। ১৯০ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীনের উহান শহর। ১৮২ স্কোর নিয়ে যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারতের মুম্বাই ও চীনের চেংডু। ১৭৯ স্কোর নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে চীনের বেইজিং। ১৭৫ স্কোর নিয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের এ তালিকা প্রকাশ করে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই স্কোর একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে কি না, তা জানায়।
তথ্যমতে, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়।
একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং স্কোর ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকলে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়। বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এটা সব বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
শীতকালে ঢাকার বাতাসের গুণমান অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো: ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলা। শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণকাজ, রাস্তার ধুলা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষিত কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে ঢাকা শহরের বাতাসের গুণমান দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।
বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, নিম্ন শ্বাসনালীর সংক্রমণ এবং বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মতে, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন।