চমেকের সেই ছাত্রলীগ নেতা লাইফ সাপোর্টে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১, ২০২১, ১১:০৪ এএম

চমেকের সেই ছাত্রলীগ নেতা লাইফ সাপোর্টে

ক্যাম্পাসের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে চমেক হাসপাতালে ভর্তি থাকা এমবিবিএস ৬২তম ব্যাচের ছাত্র মাহাদি জে আকিব মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

রবিবার (৩১ অক্টোবর) হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. রঞ্জন কুমার নাথ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আকিবের চিকিৎসার জন্য নিউরোসার্জারি, নিউরোলজি ও অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাদের তত্ত্বাবধানে ৩০ অক্টোবর আকিবের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

শনিবার সকালে আকিবের উপর হামলা চালায় কলেজের কিছু ছাত্র। তার মাথার আঘাত গুরুতর। অস্ত্রোপাচারের পর থেকেই আইসিইউতে পড়ে আছে নিথর দেহ।

“হাড় নেই, চাপ দেবেন না” লেখা সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো রয়েছে আকিবের মাথা। সঙ্গে সাদা ব্যান্ডেজে ঢেকে দেওয়া হয়েছে তার চোখও।

মাথার ব্যান্ডেজের ওপর এমন লেখার কারণ হিসেবে অস্ত্রোপাচারের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আকিবের আঘাত খুব বেশি ছিল। তার মস্তিষ্কে এবং মাথার হাড়ে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। মাথার হাড়ের একটা অংশ আপাতত তার পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলে আবার সেটা আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হবে।’

চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতির নাম ‘De compressive craniectomy with evacuation of epidural and subdural hematoma’ বলেও জানান তিনি।

ছেলের এমন দুঃসংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার ও স্বজন তৌফিকুর রহমান। আকিব সুস্থ হয়ে ফিরবেন বলে আশা করেন তারা। স্বজনরা তার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তবে চিকিৎসকরা এখনও আকিবকে শঙ্কামুক্ত বলছেন না।

আকিবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে কলেজের সামনের সড়কের ফুটপাতের ওপর। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সাত থেকে আটজন আকিবকে ঘিরে ধরে মারছে। লাঠি ও লোহার রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করছে।

ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। এর আগে ২৯ অক্টোবর রাতেও দুই পক্ষের মধ্যে ছাত্রাবাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

দুই গ্রুপের একটির নেতৃত্বে রয়েছেন মাহাদি জে আকিব। তিনি ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাহফুজ ও নাইমুল ইসলাম।

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার রাতেই ছাত্রলীগের কর্মী তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় উল্লেখ করা ১৬ জন আসামির মধ্যে পুলিশ এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Link copied!