অক্টোবর ২, ২০২২, ০৪:২৩ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে ৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামাতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
আজ রবিবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকারসহ ২০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকগণ ছাত্রদলের উপর হামলাকারীর দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদনের পাশাপাশি ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নবগঠিত কমিটির নেতৃবৃন্দের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। উপাচার্যের দেয়া সময়সূচি অনুযায়ী তার সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় নীলক্ষেত এলাকাস্থ গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের কাছে ছাত্রলীগের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এ ঘটনায় ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহান আরিফ ও রাজু আহমেদসহ অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। আহত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা রাজধানীর একটি হাসপাতালে আজও চিকাৎসাধীন রয়েছে। ছাত্রলীগের নির্মম, ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন, ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে, ছাত্রদলের উপর্যুক্ত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রায় একই সময়ে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান ও ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে আগমন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল। এ নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বক্তব্যও আমরা দেখেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতি সত্ত্বেও উপাচার্য ছাত্রদলের সাথে তাঁর পূর্বনির্ধারিত সৌজন্য সাক্ষাৎ কর্মসূচি বাতিল করেননি। তাই স্বাভাবিক কারণেই আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ছাত্রদলের সাথে উপাচার্যের সাক্ষাৎ কর্মসূচি নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এটি প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল বলেই আমরা মনে করি।
হামলার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য গনমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গত ২৭ তারিখে ছাত্রদলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ছাত্রলীগ ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অপ্রচার চালিয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে নাম ও ছবিসহ ছাত্রলীগের হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের অপ্রপচারকে মিথ্যা ও অসার প্রমাণ করা হয়েছে। আমরা সত্য উদঘাটন করে দেশবাসীকে তা অবহিত কারার জন্য সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমসমূহকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি ৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছে সংগঠনটি।
(ক) ক্যাম্পাসে সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
(খ) ২৭ সেপ্টেম্বরের হামলায় আহত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ।
(গ) ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইননানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
(ঘ) ক্যাম্পাস ও হলে ক্রীয়াশীল ছাত্রসংগঠনসহ সকল দল-মতের সহাবস্থান ও নির্বিঘ্নে কর্মসূচি পালনের নিশ্চিয়তা বিধান করা ।