মার্চ ১৭, ২০২২, ১১:১৩ পিএম
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহ এক ট্রাক সৈন্য পাঠালেই বঙ্গবন্ধু মারা যেতেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শফিউল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে শেখ সেলিম বলেন, “বঙ্গবন্ধু সেনাপ্রধান শফিউল্লাহকে বলেছিলেন, শফিউল্লাহ তোমার আর্মি আমাকে আক্রমণ করেছে। তুমি দেখো। দেখছি বলেও কিছু করেনি। বঙ্গবন্ধু আবার শফিউল্লাহকে ফোন করে বলেন, আমার কামালকে ওরা হত্যা করেছে, তুমি কী করো? তখন সে বঙ্গবন্ধুকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিল।’
আওয়ামী লীগের সিনিয়র এই নেতা আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু কারও কাছে মাথা নত করতে শেখেননি। আত্মসমর্পণ করতে শেখেননি। তার কিছুক্ষণ পর বঙ্গবন্ধুকেও হত্যা করা হয়। কিন্তু শফিউল্লাহ যদি এক ট্রাকও আর্মি পাঠাতো, তাহলে বঙ্গবন্ধু মারা যেতেন না। সে তা করে নাই। বরং সে রেডিও সেন্টারে গিয়ে মোস্তাক আর খুনিদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে।”
শফিউল্লাহ ও খালেদ মোশাররফের সমালোচনা করে শেখ সেলিম আরও বলেন, “শফিউল্লাহ এখনো বেঁচে আছে। কিন্তু, মানুষ তাকে আজ ঘৃণা করে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য খালেদ মোশারফও দায়ী। তাকেও মরতে হয়েছে। সেদিন যদি বঙ্গবন্ধুকে সে বাঁচাতে যেত, তাহলে তার পরিণতি অমন হতো না।”
কর্নেল তাহেরকে বঙ্গবন্ধু চাকরি দিয়েছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, “ সেই তাহেরও বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিল। সে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য গণবাহিনী করেছিল। সশস্ত্র বাহিনী করেছিল। সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সে বিপ্লবী গ্রুপ তৈরী করেছিল। জিয়ার সাথে একত্রিত হয়ে রেডিও স্টেশনে গিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে চায়। কিন্তু, ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে জিয়ার সাথে তার দ্বন্দ্ব হয় এবং কর্নেল তাহেরের করুণ পরিণতি হয়। তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।”
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেন শেখ সেলিম। তিনি বলেন, ‘এর প্রতিফল কী হয়েছে? পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসি দিয়েছিল।’
সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “কর্নেল গাদ্দাফি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ফারুক-রশিদদেরকে আশ্রয় দিয়েছিল। সেই গাদ্দাফিকে তার দেশের জনগণ রাস্তার ওপর ফেলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তার পরিণতিও করুণ।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধুর নাম খুনিরা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু, যতদিন বাংলার মানুষ থাকবে, বাংলার ইতিহাস থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না।” বঙ্গন্ধুর দৈহিক মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু তার আদর্শের মৃত্যু হবে না। বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে চিরদিন নক্ষত্রের মতো জ্বলবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।