কিছু কারখানা অর্থপাচারের জন্যই গড়ে তোলা হয়েছে: উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

জাতীয় ডেস্ক

আগস্ট ২, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম

কিছু কারখানা অর্থপাচারের জন্যই গড়ে তোলা হয়েছে: উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেছেন, দেশের কিছু ব্যক্তি শুধুমাত্র বিদেশে অর্থপাচারের উদ্দেশ্যেই কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তবে তিনি স্বীকার করেন, অনেক ভালো মালিকও আছেন, যাঁরা দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

শনিবার (২ আগস্ট) রাজশাহীর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং শ্রমিকদের মাঝে আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

কারখানা বন্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “আমি কোনো কারখানা বন্ধের জন্য দায়ী নই। কিছু মালিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এখন ঋণের টাকা ফেরত দিতে না পেরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এসব কারখানা গড়া হয়েছে মূলত অর্থনৈতিক অনিয়মের উদ্দেশ্যে।”

তিনি বলেন, “তবুও দেশে এখনো অনেক কারখানা চালু রয়েছে। না থাকলে ৭-৮ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কীভাবে হতো? ভালো মালিকরাও আছেন, যারা কখনো ঋণখেলাপি হননি, শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন দিচ্ছেন, দেখভাল করছেন। বড় বড় অনেক কারখানাই কার্যকরভাবে চলছে।”

শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে ড. সাখাওয়াত বলেন, “শ্রমিকরা চাইলে আন্দোলন করতেই পারেন। ন্যায্য দাবির পক্ষে রাস্তায় নামা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমিও চাইলে রাস্তায় নামতে পারি।”

ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, “অনেক শ্রমিক সংগঠনে দেখা যায়, কোনো নির্বাচন ছাড়াই একজনের জায়গায় আরেকজন বসে গেছেন। অথচ নির্বাচন হওয়া উচিত। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়েই একজন রয়েছেন, যিনি ২৭ বছর ধরে একই পদে রয়েছেন—তিনি প্রায় স্থায়ী হয়ে গেছেন। এটা হওয়া উচিত নয়। গণতন্ত্রের কথা বললে, তা সব স্তরে থাকতে হবে।”

এর আগে একই ভবনে একটি গবেষণা সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা। সেখানে তিনি চা বাগানের নারী শ্রমিকদের মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, “চা বাগানে শৌচাগার না থাকা অত্যন্ত অমানবিক। এতে করে নারী শ্রমিকদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এমনকি সেখানে বিশুদ্ধ পানিও নেই। এই অবস্থা চলতে পারে না।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক ওমর মো. ইমরুল মোহসিন এবং রাজশাহী বিভাগের উপমহাপরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম।

Link copied!