ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স্লোভেনিয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগস্ট ২, ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম

ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স্লোভেনিয়ার

স্লোভেনিয়ার মারিবোরে গাজা উপত্যকায় সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন প্রতিবাদকারীরা।

গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের অস্ত্র বাণিজ্যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্লোভেনিয়া।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম দেশ, যারা ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র আমদানি, রপ্তানি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করল।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এক ঘোষণায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানান স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট গোলোব।

তিনি বলেন, “স্লোভেনিয়া হচ্ছে প্রথম ইউরোপীয় দেশ যারা ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র আমদানি, রপ্তানি ও ট্রানজিট পুরোপুরি নিষিদ্ধ করেছে।”

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইইউ এখনো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি, অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণে। ফলে স্লোভেনিয়া এককভাবেই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।

সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজায় প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, কারণ সেখানে পরিকল্পিতভাবে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল প্রতিটি দেশের উচিত দৃঢ় অবস্থান নেওয়া—এমনকি যদি অন্যদের আগেই তা করতে হয়।”

সরকার আরও জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা ইসরায়েলের উদ্দেশে কোনো সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির অনুমতি দেয়নি।

এর আগেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দেশটি। জুলাইয়ের শুরুতে স্লোভেনিয়া প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে ইসরায়েলের দুই কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রীকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে। তাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি “গণহত্যামূলক বক্তব্য” দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

চলতি বছরের জুনে স্লোভেনিয়ার পার্লামেন্ট ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনের পর এই পদক্ষেপ নেয় তারা। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসব দেশ এই স্বীকৃতি দিয়েছে।

সম্প্রতি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডাও জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে। তবে ইসরায়েল এই উদ্যোগকে “হামাসকে পুরস্কৃত করার” সমান বলে নিন্দা জানিয়েছে।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করছে। গত ২২ মাসের যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে আরও লাখো মানুষ খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকটে পড়েছেন।

এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিলে সেটি হবে হামাসকে “পুরস্কৃত” করার শামিল।

Link copied!