সেন্ট্রাল হাসপাতালে নবজাতক ও তার মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের ওপর দায় চাপিয়ে ডা. সংযুক্ত সাহা বলেছেন, ‘মাহবুবা রহমান আঁখিকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন আমি ছিলাম না। আমাকে না জানিয়েই ওই রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে এবং অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর পরীবাগে নিজ বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. সংযুক্তা সাহা আরও বলেন, ‘যে মানুষটা দেশেই নাই তার নাম করে কেন রোগী ভর্তি করবেন। এটা কার স্বার্থে? আমি যদি অপারেশনে না করি, রোগী যদি নাই থাকে তাহলে ভর্তি করালেন কোন আক্কেলে? এটা অবশ্যই একটা বেআইনি ব্যবস্থা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আঁখি আমার রোগী ছিলেন না। তিনি কুমিল্লার একটি স্থানীয় হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়েছেন। এ বছরের মার্চে তিনি দুবার সেন্ট্রালে এসে আমাকে দেখিয়েছিলেন। নিয়মিত রোগী হতে হলে একজন গর্ভবতীর গর্ভাবস্থার শুরুতে প্রতি মাসে একবার এবং শেষের দিকে দুই সপ্তাহে একবার দেখাতে হয়। আঁখি আমার নিয়মিত রোগী ছিলেন না।’
অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে এই চিকিৎসক বলেন, ‘আঁখি যখন হাসপাতালে, তখন আমি দেশে ছিলাম না। আমার টিকিট ও বোর্ডিং পাস আমার কাছে আছে। আমি ভিডিও কলে অপারেশন মনিটর করিনি।’
সেন্ট্রাল হাসপাতালের নামে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের পক্ষ থেকে এ ধরনের অসদাচরণ, অপরাধমূলক পদক্ষেপ আমার সুনামকে বেআইনিভাবে পুঁজি করে কিছু আর্থিক লাভের জন্য একটা মানুষের জীবন নিয়ে রোগীদের বিভ্রান্ত করার জন্য অপকৌশল ছাড়া আর কিছুই না।’
সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধের জন্য সামাজিক আন্দোলন শুরু করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে একটা পক্ষ এসব কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ডা. সংযুক্তার অভিযোগ, ওই মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব আপনারা এই অনিয়মের সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
তিনি আরও বলেন, আমি আঁখি এবং তার সন্তানের জন্য শোক প্রকাশ করছি। তাদের বিদেহী আত্মার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। নবজাতকের পিতা মো. ইয়াকুব আলী এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। আমাদের সবার জন্যই এই অবহেলাজনিত মৃত্যু কাম্য নয়। আসুন আমরা এই সমস্যাটি এড়িয়ে না গিয়ে প্রকৃত দোষীকে খুঁজে বের করি।
উল্লেখ্য, অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তানের জন্ম দেয়ার ইচ্ছা থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে এসেছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী মাহবুবা রহমান আঁখি। ৯ জুন কুমিল্লা থেকে আসা এই রোগীকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে সি-সেকশন সার্জারির সময় নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং মায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। এরপর ল্যাবএইডে নেওয়া হলে সেখানে গত ১৮ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আঁখি।