দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে বসে না থেকে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়োর আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহবান জানান। ২ মার্চ ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “এ সরকার দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য বিনষ্ট করে দিচ্ছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ভিন্নমত পোষণ করতে পারছে না। ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই কারাগারে যেতে হচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে পারছে না। সৎভাবে কেউ ব্যবসা করতে পারছে না। দলীয় লোক না হলে সেই ব্যবসায়ীর প্রতি চলে দমন-নিপীড়ন।”
তিনি বলেন, “এ অবস্থায় বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই আন্দোলন বিএনপির একার আন্দোলন নয়। এটা গোটা জাতির সংগ্রাম। স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে সকল গণতন্ত্রগামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
২ মার্চকে জাতীয় জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, কিন্তু ৫২ বছরেও এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের রূপকার মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর অবদান, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্বদানকারী তাজউদ্দীন আহমেদের অবদানও স্মরণ করা হয় না। আজকে ভিন্ন দল করার জন্য স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আ স ম রব, ইশতেহার পাঠক শাজাহান সিরাজ, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকেও স্মরণ করা হয় না। বরং জিয়াউর রহমানকে একটা খলনায়ক হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) বলে, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সবকিছুই নাকি করেছে আওয়ামী লীগ এবং একজন ব্যক্তি।”
ভারতের এক বিতর্কিত ব্যবসায়ীর সাথে সরকার বিদ্যুৎ নিয়ে একটি চুক্তি করেছে উল্লেখ করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, “যার ফলে ২০০ টাকার কয়লা ৪০০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সবকিছুর দাম আরো বেড়ে যাবে। তারা আইন করেছে, গণশুনানি না করেই আবারো বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারবে।” এ সরকার জনগণের টাকা লুটপাট করতেই বারবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় চেপে বসেছে। তারা আবারও বাকশাল কায়েম করতে চায়। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে লুটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। চলমান যুগপৎ আন্দোলনে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই আন্দোলন গোটা জাতির।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।