এপ্রিল ২৯, ২০২১, ০৮:১২ পিএম
‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বেশ কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মুনিয়ার লেখা ছয়টি ডায়েরি অভিযোগ প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বুধবার (২৮ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীর যে ডায়েরিগুলো আমরা উদ্ধার করেছি, সেগুলোতে তার চরম হতাশা ও মানসিক বিপর্যস্ততা ফুটে উঠেছে। তার এই লেখা গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হবে।’
সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘ ওই শিক্ষার্থী তার ডায়েরিতে তাদের সম্পর্ক, সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতিতে বাধা, অভিযুক্তের সঙ্গে তার সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রত্যাশা এবং অভিযুক্তের পরিবারের বাধার কথা লিখেছেন।’
মুনিয়া তার ডায়েরিতে তার গুরুতর হতাশার বর্ণনা দিয়েছেন এবং এগুলো মামলাটি প্রতিষ্ঠিত করতে কাজে লাগবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পুলিশ ওই ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ, মুনিয়ার ফোনে থাকা তথ্য এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
উপকমিশনার আরও বলেন, ‘এসব প্রমাণ যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করার পর আমরা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাত্রা যোগ করতে পারব।’
এসময় তিনি বলেন, ‘পুলিশ দ্রুত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। এটা মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারে। এ ছাড়া কর্মকর্তারা ডিএনএ ও ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফলের জন্যেও অপেক্ষা করছেন। আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় মামলাটি প্রমাণের জন্য সব ধরনের তথ্য-প্রমাণ লাগবে আমাদের।’
সুদীপ চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সব প্রমাণ পাওয়ার পর পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ভাববে। আমরা সবাই শিক্ষার্থীকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এই তদন্তে পুলিশের ওপর কোনো চাপ নেই।’
এ বিষয়ে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান তার ধানমন্ডির বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘অপরাধ যে-ই করুক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।’
এর আগে পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার একটি আদালত আনভীরের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
গত সোমবার রাতে গুলশানের একটা ভাড়া বাসা থেকে ওই কলেজশিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তার বোন ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’র অভিযোগ এনে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার বাদীর দেওয়া তথ্য অনুসারে, আনভীর ২১ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এবং তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
ভবনের নিরাপত্তা কর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটটিতে ওই শিক্ষার্থী একাই থাকতেন। অভিযুক্ত মাঝেমধ্যে সেখানে যেতেন।