শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলার আগাম সতর্কতা দিয়েছিলেন সাঈদ খোকন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২১, ০৭:০৫ পিএম

শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলার আগাম সতর্কতা দিয়েছিলেন সাঈদ খোকন

২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার উপর হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা আগেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়েছিল। শুক্রবার (২০ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুই একটি কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সাঈদ খোকন এ দাবি করেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা, স্মৃতির পাতা থেকে জানা অজানা দুই একটি কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করতেই আব্বা আমাকে নেত্রীর কাছে পাঠিয়েছিলেন।

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় খোকন বলেন, আব্বা তথ্য পেয়েছিলেন কিছু একটা হতে পারে। তাই নেত্রীকে বার্তা পৌঁছে দিতে আমাকে সুধাসদনে পাঠান। নেত্রী তখন সাংগঠনিক সফর শেষে সুধাসদনে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কারো সঙ্গে দেখা করছিলেন না। তখন রাত ১০টা পেরিয়ে গেছে। আমি সুধাসদনে উপস্থিত হয়ে প্রয়াত বজলু ভাইয়ের মাধ্যমে নেত্রীর সঙ্গে দেখা করি। তাকে বললাম, আপনাকে একটি বিষয় জানানোর জন্য আব্বা আমাকে পাঠিয়েছেন। আমি নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) বললাম, আপনার উপর একটি সম্ভাব্য হামলা চূড়ান্ত হয়েছে। হামলাকারীরা ঢাকায় চলে এসেছে। তাদের সম্ভাব্য হামলার স্থান হিসেবে আপনার সুধাসদনের বাসা, আপনার যাতায়াত পথ এবং আমাদের অনুষ্ঠানস্থল। আব্বা বলেছেন, আপনাকে আমাদের বাসায় (নাজিরাবাজার) চলে যেতে। আপনি এখানে মোটেও নিরাপদ না। আমি নেত্রীকে আরও বললাম, আপনারও তো অনেক সূত্র আছে। আপনি একটু কনফার্ম করে নেন।

সাবেক এ মেয়র বলেন, আমার কথা শুনে নেত্রী কিছুক্ষণ চুপ থেকে একটু হেসে বললেন, এত ভয় পেলে কি আর রাজনীতি হয়? আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এ দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনের সামান্য মায়াও আমি তার চেহারায় দেখতে পাইনি সেদিন। কত বিশাল সাহসের অধিকারী তিনি। নেত্রী আমাকে বাসায় ফিরে যেতে বলে বললেন, দেখা যাক কী হয়।

বক্তব্যে সাঈদ খোকন আরও বলেন, সেখান থেকে নেমে আমি নিচে এসে দীর্ঘসময় বসে রইলাম। মন মানছিল না। সুধাসদনেও তো আক্রমণের সম্ভাবনা আছে। এ অবস্থায় চলে যেতে মন চাচ্ছিল না। নেত্রী খবর পাঠিয়ে আমাকে বাসায় চলে যেতে বললেন। পরের দিন অনুষ্ঠান শুরু হলে প্রথম বোমাটি  ঠিক আমার কাছাকাছি এসে পড়ল। মনে হলো আমার দুটি পা ঝলসে গেল। এক লাফে ট্রাকের উপর উঠে গেলাম। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না আমার পা আছে কি নেই। বাবা মানবঢাল তৈরি করে নেত্রীকে বাঁচালেন। তার সারা শরীরে স্প্লিন্টারের আঘাত ছিল। মাথা থেকেও অঝোরে রক্ত ঝরছিল।বাবাকে বাঁচাতে পারিনি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই হামলা হয়েছে। সেখানে তারেক রহমানের কেবল যাবজ্জীবন সাজা হলো। আর তিনি এখন লন্ডনে আরাম আয়েশ করে জীবনযাপন করছেন। শুধু যাবজ্জীবন নয়, তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় পুনর্বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। একজন আহত ও বাবাহারা পরিবারের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে এটাই তার একমাত্র দাবি বলে জানান হানিফপুত্র সাঈদ খোকন।

Link copied!