ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)-ত কার্জন হল এলাকা যেন পরিণত হয়েছে বহিরাগতদের আস্তানায়। প্রেমিক-প্রেমিকার একান্ত সময় কাটানোর এক উপযুক্ত জায়গায়ই যেন কার্জন হল এলাকা। এর ফলে কার্জন হল এলাকায় অনেক সময়ই যুগলদের পাওয়া যায় খুবই অশালীন এবং আপত্তিকর অবস্থায়। এ নিয়ে বিরক্ত ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা যেন নিজেদের ক্যাম্পাসেই হয়ে উঠছে বহিরাগত।
এ নিয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী সাদমান হক বলেন, ‘নিজ ক্যাম্পাসে এসে নিজেকেই বহিরাগত মনে হয়। এই এরিয়ায় হাঁটতে আসা বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ারও যেন সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে দ্য রিপোর্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাকসুদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ কপোত-কপোতীরা ক্যাম্পাসের নয়, বেশিরভাগই বহিরাগত। বহিরাগতদের নিয়ে বিশেষ করে বহিরাগত কপোত-কপোতীরা যেন ক্যাম্পাসের কোন জায়গায় দৃষ্টিকটু অবস্থায় অবস্থান না করতে পারে সেজন্য প্রক্টর টিম কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও সহকারী প্রক্টর ড. মো. হাসান ফারুক বলেন, ‘কার্জন হল এলাকার সার্বিক পরিবেশ বিশেষত বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ ও অশালীন কার্যকলাপ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা ও জীববিজ্ঞান অনুষদের মাননীয় ডিনের পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা কার্জন হল এলাকার মূল প্রবেশদ্বার, বিভিন্ন বিভাগের প্রবেশদ্বার, বারান্দা ও কার্জন হল এলাকার মাঠগুলোর বিভিন্ন স্থানে নোটিশ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি, যাতে বহিরাগতরা কার্জন হল এলাকায় অবস্থান না করেন এবং কেউ কোনো ধরনের অসামাজিক ও অশালীন কার্যকলাপ না করেন।
সহকারী প্রক্টর আরও বলেন, ‘গত ৫ জুন নোটিশ দেওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত কার্জন হলে এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছি এবং অদ্যবধি ৩২৫ জন বহিরাগত জুটির মুচলেকা নিয়েছি, তাদের কাউকে কাউকে পুলিশেও সোপর্দ করা হয়েছে। সুখকর এই যে যারা একবার আমাদের কাছে মুচলেকা দিয়েছেন আমাদের অভিযানের সময় আমরা আর দ্বিতীয়বার তাদের কার্জন হল এলাকায় পাইনি। ফলে বহিরাগতদের বিচরণ কমছে এবং শিক্ষার পরিবেশ উন্নত হচ্ছে। আমাদের এ অভিযানে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বিশেষত আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের পূর্ণ সহযোগিতা ও সমর্থন আমরা পাচ্ছি।
বহিরাগতদের অশালীন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কঠোর পদক্ষেপ ও প্রক্টরিয়াল বডির অব্যাহত অভিযানের বিষয়টি প্রচার পেলে একাধারে যেমন সকলের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ পূর্বের তুলনায় আরও উন্নত হবে বলে মন্তব্য করেন সহকারী প্রক্টর।
প্রক্টরিয়াল টিমের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ক্যাম্পাসের অন্যান্য এলাকা যেমন বটতলা-আমতলা ইত্যাদি স্থানে বহিরাগতদের আনাগোনা কমাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লাইটিং ব্যবস্থার উন্নতি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বড় গাছগুলোর ডাল-পালা ছেঁটে দেওয়া হবে যাতে করে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ না থাকে। ক্যাম্পাসে কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তির খোঁজ পায়নি বলে জানিয়েছে প্রক্টরিয়াল টিম।