মে ২৪, ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, সাম্য হত্যার বিচার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় সরকারের দাবিতে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
শনিবার (২৪শে মে), বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান বলেন, "আমরা আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়েছি যেখানে বাংলাদেশের আপামর জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পতিত স্বৈরাচার ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাদের হটিয়ে মোহাম্মদ ইউনুসের সরকারকে ক্ষমতায় এনে যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল তা ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও সাম্য হত্যার দাবিতে ৭৫ ঘন্টা ধরে অনশনে থাকা বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ তিনজনের সাথে প্রশাসন দেখা করলেও কোন নির্দিষ্ট রূপরেখা দিতে পারেনি।"
তিনি আরো বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের চল্লিশ হাজার শিক্ষার্থীর বৈধ প্রক্রিয়ায় কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি কোনো চাপে নির্বাচন দিতে বিলম্ব করে আমরা তাদের বাধ্য করব নির্বাচন দিতে।"
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সানাউল্লাহ হক বলেন, "এটা খুবই লজ্জাজনক যে ৫ আগস্টের পরে কোন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আমাদের অনশন করতে হবে। এছাড়াও বাংলাদেশের একটি বৃহৎ ছাত্র সংগঠনের একজনকে হত্যার প্রায় ১১ দিন পার হয়ে গেলেও মূলহোতাকে এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তাহলে যদি সাধারণ নাগরিক খেটে খাওয়া মানুষের হত্যাকাণ্ড হয় তারা বিচার পাবে কিনা এটা আমাদের আশঙ্কার জায়গায় থাকবে।"
এছাড়াও তিনি বলেন, "গত দুইদিন ধরে এক ধরনের নাটক চলছে যে ডক্টর ইউনুস সাহেব পদত্যাগ করবেন। যদি তার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সমস্যাই হয় তাহলে উনার উচিত রাষ্ট্রের যত রাজনৈতিক দল এবং অংশীজন আছে তাদেরকে ডেকে সমস্যার বিষয়টি খুলে বলা। কিন্তু সেটা না করে তিনি এনসিপির আহ্বায়ককে জানালেন। আমার প্রশ্ন নাহিদ ইসলাম কি বর্তমান সরকারের মুখপাত্র ?"
বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, "গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতে সবাই সবকিছু পেয়েছে। যারা আমলা সচিব হতে পারে নাই তারা আমলা সচিব হয়েছে, ভিসি হয়েছে কিন্তু ছাত্ররা কি পেয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ জাকসু,রাকসু ক্যাম্পাসে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানাই।"
এছাড়াও তিনি বলেন," আমরা এখন শুনতে পাচ্ছি ছাত্র-জনতা বিভাজন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি মহান প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মে দেশের আপামর জনতা খেটে খাওয়া মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পকেট বন্দি হয়ে গেছে। কিছু মুষ্টিমেয় মানুষের কারণে আমাদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কলঙ্কিত হয়েছে।"
এছাড়াও তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান যেন নাহিদ ইসলাম, মাহফুজ আলমের চোখ দিয়ে দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিবেচনা করা না হয়। এবং দ্রুততার সাথে জাতীয় সরকার গঠন করার আহ্বানও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা তাদের কিছু দাবি তুলে ধরেন
১. সাম্য হত্যার বিচার করা।
২. সকল ক্যাম্পাসের ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা।